সিআইডি-র তলবে সোমবার ভবানী ভবনে হাজির হলেন ডানকান চা বাগানের মালিক গৌরীপ্রসাদ গোয়েন্কা। এর আগে তিনবার ওই শিল্পপতিকে তদন্তের জন্য ভবানীভবনে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি শহরের বাইরে থাকায় সংস্থার এক ডিরেক্টর এম এইচ শেনয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
সিআইডি সূত্রের খবর, এ দিন গোয়েন্দারা তাঁর কাছে জানতে চান, কেন ডানকান গোষ্ঠীর ওই চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি, রেশন, পিএফ-সহ অনান্য সুযোগ সুবিধে বকেয়া রয়েছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, গত ২০ অক্টোবর রংলি-রংলিওট দার্জিলিংয়ে ডানকান গোষ্ঠীর একটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা দিলবীর সুব্বা মজুরি, রেশন, পিএফ-সহ বকেয়া পাচ্ছেন না বলে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই গৌরীপ্রসাদ গোয়েন্কা এবং তাঁর ছেলে হর্ষবধনের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ১ নভেম্বর ওই মামলাটির তদন্তভার নেয় সিআইডি।
সিআইডি-র দাবি, গোয়েন্দাদের ওই প্রশ্নের উত্তরে এ দিন শিল্পপতি জানান, তিনি বাগানের দৈনিক কাজকর্ম দেখেন না। যারা দেখেন, তাঁদের বলবেন, গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখা করতে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘সংস্থার তরফে যারা ওই কাজকর্ম দেখেন প্রয়োজনে তাঁদের ভাবনীভবনে পাঠাবেন বলেও কিছু দিন সময় চেয়েছেন ওই শিল্পপতি। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন ওই কর্মীরা বর্তমানে শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁদের এখন ভবানী ভবনে পাঠালে সেই প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হবে।’’
পরে ফোনে গৌরীপ্রসাদ গোয়েন্কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘‘আমার কাছে গোয়েন্দারা কোন নথি চাননি। যদি চাওয়া হয় তা হলে তা দিতে আমার কোন অসুবিধে নেই। কারণ, তা গোপনীয় কিছু নয়।’’ তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শিল্পপতির কথা মতো তাঁকে সময় দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের শেষে ফের ওই তাঁকে ডাকা হতে পারে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর।
উত্তরবঙ্গে পাহাড়-সমতল মিলিয়ে ওই গোষ্ঠীর মোট ১৬টি চা বাগান রয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, বছর খানেক ধরে সব বাগানেই অচলাবস্থা চলছে। ফলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে শ্রমিকদের বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। এর জেরে শ্রমিকরা অর্ধাহার-অপুষ্টির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সংস্থার হাতে থাকা বাগানগুলিতে শ্রমিকদের কত পাওনা বকেয়া রয়েছে, তার বর্তমান পরিস্থিতিই বা কেমন, সে বিষয়ে সবিস্তার রিপোর্ট সংগ্রহ করার পর ওই চা বাগানের মালিক জি পি গোয়েন্কা এবং তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবানী ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময় কলকাতার বাইরে থাকায় গোয়েন্দাদের ডাকে ভবানী ভবনে হাজির হননি তিনি। সংস্থার অন্য প্রতিনিধিরা গোয়েন্দাদের সামনে হাজির হয়ে সময় চেয়েছিলেন।