Dibyendu Adhikari

দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে রাজ্য কমিটিকে সুপারিশ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের

তমুলকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে রাজ্য কমিটিকে সুপারিশ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ১৩:২৯
Share:

তমুলকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।

তমুলকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে রাজ্য কমিটিকে সুপারিশ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার দিব্যেন্দুর দাদা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ককে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিজেপি। তারপরেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই সুপারিশ, রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের সুপারিশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বার তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই চূড়ান্ত হবে।’’ অবশ্য এই ঘটনার বহু আগে থেকেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে শুভেন্দুর তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই অধিকারীদের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের কার্যত সংঘাত শুরু হয়েছে। তার ঠিক পরেই দাদার হাত ধরেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছেন ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। এগরায় অমিত শাহের জনসভায় হাজির হয়ে দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে তৃণমূলের চক্ষুশূল হয়েছেন শুভেন্দু-সৌমেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী। যিনি এখনও কাঁথি লোকসভা থেকে তৃণমূলের নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ।

পরিবারের সদস্যদের এত বিদ্রোহ সত্ত্বেও মৌনী থেকেছেন একমাত্র দিব্যেন্দু। এখনও প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতৃত্ব বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও বিরূপ মন্তব্য করেননি। এ বার তাঁর বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারীদের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত এক নেতার কথায়, ‘‘শুভেন্দু, সৌমেন্দু কিংবা শিশিরবাবুর মতো দিব্যেন্দু প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, ভোটের আগে থেকেই নিষ্ক্রিয় থেকেছে। এ ছাড়াও গোপনে দলবিরোধী কাজে পরিবারের সঙ্গ দিয়েছে। সেই প্রমাণও আমাদের কাছে রয়েছে। সেইসব প্রমাণ দিয়েই আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।’’

Advertisement

তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অর্থ তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা। কিন্তু লোকসভা ভোটের এখনও ৩ বছর দেরি। তার আগে দিব্যেন্দুকে বহিষ্কার করার অর্থ হবে সহজেই তিনি সাংসদ থেকে যেতে পারবেন। সঙ্গে দলীয় কোনও হুইপ মানতেও বাধ্য থাকবেন না। দুর্গাপুর পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল সরাসরি বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। আবার কাঁথির সাংসদ শিশিরবাবু সরাসরি যোগ না দিলেও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভোট প্রচারের সভায় হাজির থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাই ২২ থেকে নেমে তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা এখন ২০। এমতাবস্থায় দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়তে হবে তৃণমূল নেতৃত্বকে, এমনটাই ধারণা রাজনীতির কারবারিদের। এমন পরিস্থিতিতে দিব্যেন্দু বলছেন, ‘‘দল আমার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিলে, তবেই আমি সেই প্রসঙ্গে কথা বলব। তার আগে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন