Eastern Railway

মালগাড়িকে রাস্তা দিতে কোপ মেল, এক্সপ্রেসে?

পূর্ব রেলের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, প্রস্তাব এসেছে মাত্র। সিদ্ধান্ত হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৪:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

শীতকালে কুয়াশার জন্য সময় মেনে চলতে না-পারায় প্রায়ই কিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়। এখন রেল মন্ত্রকের নির্দেশে পণ্যবাহী ট্রেনকে পথ ছেড়ে দিতে প্রায় ১৭ জোড়া ট্রেন বাতিল করার কথা ভাবছে পূর্ব রেল। তার মধ্যে ১০ জোড়া মেল-এক্সপ্রেস এবং বাকি সাত জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন। যুক্তি দেখানো হচ্ছে, গতি কম হওয়ায় এবং বেশি স্টপ থাকায় ওই সব ট্রেন বাতিল করে রেললাইনের জট কাটানোর পাশাপাশি মালগাড়ির জন্য রাস্তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

যে-সব ট্রেন বাতিলের প্রস্তাব এসেছে, তার মধ্যে আছে উদয়নআভা তুফান, হাওড়া-অমৃতসর, শিয়ালদহ-আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস এবং বর্ধমান-মালদহ, আসানসোল-ধানবাদ, হাওড়া-রাজগিরের মতো প্যাসেঞ্জার ট্রেনও। ওই সব ট্রেনের কয়েকটিতে টিকিটের চাহিদা ১০০ শতাংশের বেশি। বেশ কিছু ট্রেন চলছে তিন-চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। আচমকা ওই সব ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠছে।

পূর্ব রেলের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, প্রস্তাব এসেছে মাত্র। সিদ্ধান্ত হয়নি। সারা দেশেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ট্রেনের প্রাসঙ্গিকতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ পাঠায় রেল মন্ত্রক। সব সময় যে সেই সব ট্রেন বাতিল করা হয়, তা নয়। রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে এবং লাইনের উপরে চাপ কমাতে ট্রেনের সংখ্যা কমানো জরুরি বলে মনে করেন আধিকারিকদের ওই অংশ।

Advertisement

তবে রেলের বেসরকারিকরণ এবং ব্যাপক খরচ ছাঁটাইয়ের আবহে এই নির্দেশ আসায় অনেকেই আশঙ্কার মেঘ দেখছেন। যে-ভাবে পণ্যবাহী ট্রেনের জন্য পথ ছেড়ে দিতে বিভিন্ন যাত্রিবাহী ট্রেন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে, তাতে সরকারের দৃষ্ঠিভঙ্গির বদল দেখছেন অনেকেই। গত এক বছরে পূর্ব রেলের বেশ কয়েকটি শাখায় মালগাড়িকে পথ ছেড়ে দিতে সাময়িক ভাবে ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ এবং অসমগামী ট্রেনের ক্ষেত্রে এমন নজির রয়েছে। এ বার ওই প্রচেষ্টা স্থায়ী রূপ পেতে চলায় যাত্রীদের মধ্যেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রেল-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যে-সব রুটে বহু ট্রেন আছে সেখানে অনাবশ্যক ট্রেন কমানো দরকার। প্রায় সব স্টেশনে থামে, দীর্ঘ দূরত্ব যায়, এমন ট্রেন অনর্থক রেললাইন আটকে রাখে। এই যুক্তিতে ১১২টি স্টেশনে থামা তুফান এক্সপ্রেস তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রেল আধিকারিকেরা। হাওড়া ও শ্রীগঙ্গানগরের মধ্যে সরাসরি কোনও ট্রেন না-থাকলেও দিল্লি পর্যন্ত প্রায় সাত জোড়া ট্রেন আছে। কিন্তু তুফান এক্সপ্রেস শতাধিক স্টেশনে থেমে হাওড়া ও দিল্লির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ লাইন আটকে রাখে বলে রেলকর্তাদের একাংশের অভিযোগ। শীতকালে কুয়াশার কারণে সময়ে না-চলায় প্রায়ই ওই ট্রেন বাতিল করতে হয়। এই অবস্থায় ওই ট্রেন বাতিল করলে অতিরিক্ত রেক বাঁচানো ছাড়াও সোনালি চতুর্ভুজের অন্যতম হাওড়া-দিল্লি পথ খালি রাখা

সম্ভব। যদিও ওই ট্রেনে টিকিটের চাহিদা থাকে প্রায় ১৪৭ শতাংশ। প্রায় একই রকম যুক্তি দেখানো হচ্ছে হাওড়া-অমৃতসর এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রেও। রেলের উদ্যোগ তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে বুঝেই এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি কর্তারা। এটা রেল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা প্রস্তাব বলে দায় এড়িয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন