ভুয়ো পাসপোর্ট কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল ইডি। — ফাইল চিত্র।
ভুয়ো পাসপোর্ট মামলার তদন্তে ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন আজ়াদ মল্লিকের সহযোগী। ধৃত আজ়াদকে জেরা করেই ওই ব্যক্তির নাম জানতে পেরেছিলেন তদন্তকারীরা। তার পরে বার বার তাঁকে তলব করা হলেও প্রতি বারই হাজিরা এড়িয়েছিলেন তিনি। নদিয়ার চাকদহের বাসিন্দা সেই ইন্দু ভূষণকে এ বার গ্রেফতার করল ইডি।
ইডির অনুমান, এই ইন্দুই ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করতে আজ়াদকে সাহায্য করেছিলেন। অন্তত ৩০০টি ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন ইন্দু। ২০১৬ সাল থেকে ভুয়ো পাসপোর্ট কারবারের সঙ্গে যুক্ত তিনি! তদন্তকারী সূত্রে খবর, ইন্দুকে দিয়েই ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানোর কারবার চালাতেন আজ়াদ। মঙ্গলবার ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে এক দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার আবার তাঁকে আদালতে হাজির করাতে বলা হয়েছে।
গত বছরের শেষে ভুয়ো নথি দাখিল করে পাসপোর্ট তৈরির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পাসপোর্ট তৈরির একটি চক্রের কথা জানতে পারে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার হন ১০ জন। এর পরেই জানা যায়, রাজ্য জুড়ে এই চক্রের উপস্থিতি রয়েছে। পরে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় ইডি।
পাসপোর্ট মামলার সূত্র ধরে ইডি বার কয়েক রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। গত এপ্রিলে বিরাটি থেকে আজ়াদকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তদন্তে জানা যায়, ওই আজ়াদ আদতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন। তবে পরে তাঁর কাছ থেকে পাকিস্তানের নথিও পাওয়া যায়। ইডি জানিয়েছিল, আজ়াদ কাঁচরাপাড়ার একটি ক্যাফে থেকে ১২-১৩ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়ো পাসপোর্ট বানানোর কাজ করতেন। কখনও কখনও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকাও দাবি করা হত। পাসপোর্টের পাশাপাশি অন্যান্য নথি ও পরিচয়পত্র বানানোর কাজও করতেন তিনি। তাঁর মোবাইলেও এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ভুয়ো নথি ব্যবহার করে জাল পাসপোর্ট বানানোর এই চক্রের ‘মিডলম্যান’ হিসাবে কাজ করতেন আজ়াদ। সেই আজ়াদের সূত্র ধরে আরও ভুয়ো পাসপোর্ট মামলায় এক জনকে ধরল ইডি।
উল্লেখ্য, ভুয়ো পাসপোর্ট মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। তাতে বলা হয়, ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ১৩০ জন। এর মধ্যে ১২০ জনই বাংলাদেশি নাগরিক। এঁদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট নোটিস’ও জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ।