গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ হয়তো বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। তৃণমূল নেতার খোঁজ করতে করতে এমনটাই মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহানের খোঁজ করতে আইবি এবং বিএসএফের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও ইডির একটি সূত্রে খবর। এ-ও জানা যাচ্ছে যে, তৃণমূল নেতাকে ধরতে উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাগুলিতে বিএসএফকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার তৃণমূল নেতার বাড়িতে যায় ইডির পাঁচ সদস্যের একটি দল। কিন্তু সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকেরা পৌঁছনোর আগেই ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তার মধ্যেও তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁকে ডাকাডাকি করেন ইডি আধিকারিকেরা। ভিতর থেকে সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা হয়। ঠিক সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। ভাঙচুর চলে গাড়িতে। সেই সময়েই তিন ইডি আধিকারিক জখম হন। বর্তমানে তাঁরা সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য দিকে, শাহজাহান মোটর বাইকে করে পালিয়ে যান বলে স্থানীয় একটি সূত্রে খবর।
সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার রাতে আহত ইডি আধিকারিকদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সন্দেশখালির ঘটনাকে ‘অনভিপ্রেত’ এবং ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, ওই তৃণমূল নেতা যাতে শুক্রবার রাত ১২টার মধ্যে নিজে ইডির অফিসে হাজিরা দেন, সেটাই তিনি চাইছেন। কারণ, তাঁর জন্য এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কিন্তু শনিবার সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও সন্দেশখালির শাহজাহান বেপাত্তা। এর মধ্যে রাজ্যের শাসকদলের তরফে তাদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, তিনি শুনেছেন, শাহজাহানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইডির হাতে তুলে দিতে হবে বলে রাজ্যকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ বিষয়ে ইডির সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের কথাবার্তা শুরু হয়েছে। যদিও ইডি সূত্রে সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়।