West Bengal Ration Distribution Case

শঙ্কর ডান হাত হলে বালুর বাঁ হাত শাহজাহান! মন্ত্রীর হাজার কোটির ‘দেখভালের’ দায়িত্ব ছিল তাঁরও

‘মেয়েকে লেখা’ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি থেকে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছিল ইডি। সেই চিঠিতে শঙ্করের নাম ছিল। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সেই চিঠিতে নাম ছিল শাহজাহানেরও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:১৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

ইডির নাগাল এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সন্দেশখালির শাহজাহান শেখ। তিনি কেন পালাচ্ছেন, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁর ভূমিকা কতটা, তা ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। ইডি সূত্রে খবর, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের কাজ একা বনগাঁর নেতা শঙ্কর আঢ্য করতেন না। মন্ত্রীর টাকা যথাস্থানে পাঠানোর কাজ করতেন শাহজাহানও। তবে শাহজাহানের কর্মপদ্ধতি ছিল কিছুটা আলাদা।

Advertisement

ইডি মনে করছে, এক দিকে যখন শঙ্কর নানা ফরেক্স সংস্থা তৈরি করে মন্ত্রী বালুর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশিমুদ্রায় বদলে দুবাইয়ে পাঠাচ্ছেন, তখন শাহজাহান সাম্রাজ্য বিস্তার হয়েছিল ঘরের কাছে বাংলাদেশে। মন্ত্রীর টাকা তিনি সরাসরি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থায় নিয়োগ করতেন বলে ইডি সূত্রে খবর।

ইডিরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহজাহানের বিরুদ্ধে মন্ত্রী বালুর (জ্যোতিপ্রিয় এই নামেই রাজনৈতিক মহলে বেশি পরিচিত) টাকা ‘পার্ক অ্যান্ড লন্ডার’-এর অভিযোগ রয়েছে।আইনি ব্যাখ্যায় যার অর্থ কোনও একটি জায়গায় টাকা গচ্ছিত রাখা এবং তার পর তার বেআইনি লেনদেনের ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ, মন্ত্রীর টাকা উপযুক্ত ঠিকানায় জমা দিয়েছেন শাহজাহান। তার পর সেখান থেকে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে হাজার হাজার কোটির কালো টাকা সাদা করেছেন।

Advertisement

এর জন্য শাহজাহানকে শঙ্করের মতো আটখানা সংস্থা তৈরি করতে হয়নি। তার কারণ বাংলাদেশে সঙ্গে শাহজাহানের ‘যোগাযোগ’ বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সীমান্ত এলাকায় বাড়ি তাঁর। এখান থেকেই আকছার সীমান্ত পারের নানা বেআইনি কার্যকলাপ হয়। বালুর টাকার সন্ধানে নেমে যখন বাংলাদেশেও টাকা যাওয়ার তথ্য হাতে আসে ইডির, তখন তাঁরা এই সীমান্ত এলাকায় এসে রেইকি করেছিলেন। টাকা জলপথে যায় না স্থল পথে, সেই তথ্যও সংগ্রহ করেছিলেন তাঁরা। তবে শাহজাহানের নাম তাঁরা নিশ্চিত ভাবে জানতে পারেন বালুর সূত্রেই।

‘মেয়েকে লেখা’ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠি থেকে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছিল ইডি। সেই চিঠিতে শঙ্করের নাম ছিল বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন শঙ্করের স্ত্রী। তিনি জানান, ইডির কাছ থেকেই এ কথা জেনেছিলেন তিনি। সম্প্রতি একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই চিঠিতেই নাম ছিল সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানেরও। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শাহজাহানের বাড়িতে এর পরেই তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল ইডি। যদিও শাহজাহান দরজা খোলেননি। বদলে বাড়ির ভিতর থেকে ইডির উপর হামলা চালানোর জন্য গ্রামবাসীদের উস্কানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ ইডির।

এই শাহজাহান এবং শঙ্কর দু’জনেই জ্যোতিপ্রিয়কে সমান ভাবে সাহায্য করেছেন বলে অনুমান করছেন গোয়েন্দারা। হয়তো তাই শঙ্কর ধরা পড়ার পর প্রমাণ লোপাট করতে নিজের পাঁচটি মোবাইল নষ্ট করেছেন শাহজাহান। এমনকি, নিজের প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশেও আশ্রয় নিয়েছেন বলে সন্দেহ ইডি গোয়েন্দাদের। যদিও অন্য একটি সূত্র বলছে, শাহজাহান এখনও এ দেশেই আছেন। সীমান্ত লাগোয়া কোনও স্থানে আত্মগোপন করে রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন