জঙ্গি ও হাওয়ালা যোগের তদন্তভার ইডি-কে

শুধু এনআইএ-ই নয়, খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তে নামছে আরও একটি কেন্দ্রীয় সংস্থাষএনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সারদা কেলেঙ্কারির পাশাপাশি এই তদন্ত চালাবেন ইডি-র তদন্তকারীরা। এনআইএ যখন জঙ্গি যোগসাজশের তদন্তে নামছে সেখানে কী নিয়ে তদন্ত করবে ইডি? ইডি সূত্রের খবর, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এই টাকা বাংলাদেশ ও দুবাই থেকে দেশে ঢুকেছে হাওয়ালার মাধ্যমে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৩৫
Share:

শুধু এনআইএ-ই নয়, খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তে নামছে আরও একটি কেন্দ্রীয় সংস্থাষএনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সারদা কেলেঙ্কারির পাশাপাশি এই তদন্ত চালাবেন ইডি-র তদন্তকারীরা।

Advertisement

এনআইএ যখন জঙ্গি যোগসাজশের তদন্তে নামছে সেখানে কী নিয়ে তদন্ত করবে ইডি? ইডি সূত্রের খবর, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এই টাকা বাংলাদেশ ও দুবাই থেকে দেশে ঢুকেছে হাওয়ালার মাধ্যমে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন ইডি-র তদন্তকারীরা। এই জঙ্গিদের মাধ্যমে দেশে জাল টাকা ঢুকেছে বলেও প্রাথমিক ভাবে মনে করছে ইডি। তদন্তকারীদের সন্দেহ, খাগড়াগড় বিস্ফোরণে বাংলাদেশ ও নেপাল হয়ে আসা জাল টাকারও একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এই বিষয়টিও ইডি-র তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।

খাগড়াগড়ের ঘটনার পরে মৃত জঙ্গি শাকিলের স্ত্রী রাজিয়ার কাছ থেকে নগদ ৪৪ হাজার টাকাও মেলে। এই টাকা অবশ্য জাল নয়। ইডি সূত্রের খবর, খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরে অনেক তথ্য উঠে আসছে। জঙ্গিদের সঙ্গে জামাতের যোগসূত্রের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। পরে জানা গিয়েছে, দুবাই ও বাংলাদেশ হয়ে হাওয়ালা মারফত জঙ্গিদের কাছে টাকা এসেছে। আর, এখানেই ইডি-র ভূমিকার কথা। ইডি সূত্রের খবর, খাগড়াগড় কাণ্ডে জঙ্গিদের যে নেটওয়ার্কের কথা উঠে এসেছে, তার পিছনেও বিশাল অঙ্কের টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এই টাকার উৎস কী, কার মাধ্যমে, কী ভাবে এই টাকার লেনদেন হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখবে ইডি। খাগড়াগড় কাণ্ডের ধৃতদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Advertisement

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে ইডি হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানোর তথ্য পেয়েছে। তা হলে কি সারদা কেলেঙ্কারির টাকার একাংশ ব্যবহার হয়েছে জঙ্গি কার্যকলাপেও? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইডি-র তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, হাওয়ালার অর্থ এক দেশের টাকার জোগানদার (ধরা যাক রামবাবু) সে দেশের কাউকে (শ্যামবাবুকে) অনেক টাকা জুগিয়ে যাচ্ছেন। তার বিনিময়ে শ্যামবাবুর এজেন্ট অন্য দেশে থাকা রামবাবুর এজেন্টকে সম পরিমাণ টাকা ফিরিয়ে দিচ্ছেন। সারদার টাকাও হাওয়ালার মাধ্যমে এ ভাবে বিদেশে পাচার হয়েছে।

প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ)-ও বলা রয়েছে, হাওয়ালা মারফত টাকা ভারতে এলে তার তদন্তের দায়িত্ব মূলত ইডি-কেই নিতে হবে। ইডি-র এক অফিসারের কথায়, “শুধু হাওয়ালা মারফতে টাকা লেনদেনই নয়, মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় বিস্ফোরণ নিয়েও তদন্তের অধিকার রয়েছে ইডি-র। সেখানে বলা রয়েছে বিস্ফোরণে কোনও প্রাণহানি বা সম্পত্তির ক্ষতি হলে, এমনকী বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করলে অথবা প্রাণহানি বা সম্পত্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক মজুত করলে তদন্ত করতে পারে ইডি। এর প্রতিটিই বর্ধমানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।”

সারদার তদন্ত ভার ইডি-র হাতে তুলে দেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্ট ভর্ৎসনা করে বলে, আইন না মেনে এত দিন ধরে অর্থ লগ্নি সংস্থাগুলি ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছে। তখন তা নিয়ে কেন আপত্তি তোলেনি নিয়ামক সংস্থাগুলি। ইডি দায়িত্বভার এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছিল শীর্ষ আদালত। ওই ঘটনার পর থেকেই সতর্ক ইডি কর্তারা। এখন যেখানেই বেআইনি টাকা লেনদেনের উদাহরণ মিলছে, সেখানেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তে নামার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ এই সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন