শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনা(সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেল্থ স্কিম)-র কলকাতা শাখায় বড়সড় দুর্নীতির হদিশ পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)।
শুক্রবার ইডির আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনার এসপ্লানেডের অফিস এবং বেলেঘাটায় সংস্থার এক কর্মীর বাড়িতে হানা দেন। সেখান থেকে তাঁরা বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন। ইডি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ওই স্কিমকে কাজে লাগিয়ে বেশ কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে গত কয়েক বছরে।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী থেকে শুরু করে সাংসদ, স্বাধীনতাসংগ্রামীরা এই যোজনার আওতায় চিকিৎসা পরিষেবা পান। শুধু তাঁরা নন, তাঁদের পরিবারের লোকজনও এই যোজনার আওতায় রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনার কলকাতা শাখার অধীনে এই পরিষেবা প্রায় আড়াই লাখ মানুষপান।
আরও পড়ুন: বাংলায় গণতন্ত্র শেষ, মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে অমিত বললেন রথযাত্রা হবেই
ইডি সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁরা অভিযোগ পাচ্ছিলেন দুর্নীতির। এই যোজনার অধীনে রয়েছে বিভিন্ন পলিক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল এবং ডায়গনিস্টিক সেন্টার। সেখানে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিমার মতোই চিকিৎসা করালে, পরে সেই চিকিৎসার খরচ দিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। আবার অনেক বেসরকারি হাসপাতালে ক্যাসলেস চিকিৎসার সুযোগও পান ওই যোজনার অধীনে থাকা পরিবারগুলি।
সূত্রের খবর, কখনও ভুয়ো বিল তৈরি করে, আবার কখনও বিভিন্ন ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার কাছ থেকে নিম্ন মানের ওষুধ কিনে টাকা হাতানো হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এর পেছনে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনার কর্মীদেরই একাংশ। তদন্তকারীরা, এই ষড়যন্ত্রে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের যোগ থাকার সম্ভবনাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না। শুক্রবার ইডির তদন্তকারীরা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছ’টি জায়গায় হানা দেন। তার মধ্যে ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনার সিনিয়র ক্লার্ক স্নেহাশিস করের বেলেঘাটার বাড়ি এবং এসপ্লানেড ইস্টে সংস্থার অফিস। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া নথি থেকে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সমস্ত নথি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ঠিক কত টাকার দুর্নীতি তা বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: নারদ মামলায় শোভনের সঙ্গেই এ বার ইডি-র জেরা বৈশাখীকে
এর আগে ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনায় ৪০ কোটি টাকার দুর্নীতির হদিশ পেয়েছিল সিবিআই। সেসময়েও সামনে এসেছিল, এক শ্রেণির কর্মী চিকিৎসার জাল বিল তৈরি করে টাকা হাতিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারি স্বাস্থ্য যোজনা কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোর রয়েছে সল্টলেকে। সেখান থেকেও নথি সংগ্রহ করবে ইডি। ইডি সূত্রের খবর, স্নেহাশিস কর ছাড়াও যোজনার আরও কয়েক জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে।