শ্বশুর-শাশুড়িকে মার,  ভাইরাল ভিডিয়ো

ধনকৈল হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পরিতোষবাবুর দাবি, পুত্রবধূর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এক সময়ে পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে অভিযোগ নিতে না চাইলেও পরে তারা রাজি হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪৩
Share:

এক পুলিশ কর্মীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অশীতিপর শ্বশুর-শাশুড়ির উপর অকথ্য অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বিষয়-সম্পত্তি নিজের নামে করে দিতে হবে— এই দাবিতে কখনও বৃদ্ধ শ্বশুরকে জুতো পেটা করেন ওই মহিলা, কখনও শাশুড়ির মাথায় ভাতের থালা উল্টে দেন। দাদু-দিদিমাকে অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচাতে রুখে দাঁড়িয়েছেন নাতনি, যিনি সম্পর্কে ওই মহিলার ভাগ্নি। তাঁর চেষ্টাতেই এখন অত্যাচারের কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। শেষ অবধি অভিযোগ নিয়েছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশও।

Advertisement

ইশিকা বসু কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। তাঁর মামা প্রীতিতোষ গুহ শিলিগুড়ির আইআরবি ব্যাটেলিয়নে রয়েছেন। রায়গঞ্জের কলেজপাড়ায় তাঁর বাড়িতে থাকেন স্ত্রী মৌসুমী, বাবা পরিতোষ, মা গুলুদেবী ও প্রীতিতোষ-মৌসুমীর ছেলে। ইশিকার অভিযোগ, গত ১২ জুলাই তিনি যখন মামাবাড়িতে ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর দাদু-দিদার উপরে চড়াও হন মামি মৌসুমী। তাঁর আরও দাবি, দাদু-দিদাকে মার খেতে দেখে বাধা দেন তিনি। তখন মামির ঘুসি লাগে তাঁর মুখে। নখের আঁচড়ে শরীরের নানা জায়গায় ক্ষত হয়ে যায়। তার পরেই পাশের ঘর থেকে দাদুর মোবাইল এনে ভিডিয়ো করেন তিনি। পরে তা আপলোড করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। পোস্টটি তিনি এর পরে কলকাতা পুলিশের ‘পেজ’-এও করেন।

ধনকৈল হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পরিতোষবাবুর দাবি, পুত্রবধূর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এক সময়ে পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে অভিযোগ নিতে না চাইলেও পরে তারা রাজি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইশিকার ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই টনক নড়ে সকলের। উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জসওয়াল বলেন, ‘‘ঘটনা নিয়ে যদি অভিযোগ জানানো হয়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

মৌসুমীদেবী এর মধ্যে ছেলেকে নিয়ে কালিয়াগঞ্জে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি অনেক অত্যাচার করেছেন। স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে সহ্য করে এসেছি। জমি-বাড়ির উপরে আমার লোভ নেই।’’ প্রীতিতোষ বলেন, ‘‘সব সংসারেই গোলমাল হয়ে থাকে। তাই বলে তা নিয়ে থানা-পুলিশ হবে, কখনও ভাবিনি।’’ তিনি বাবা-মা, স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন বলে জানান। পরিতোষবাবু বলেন, ‘‘এই বয়সে এসে মারধর, জুতো পেটা খেতে হচ্ছে। বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। তবে বৌমা বাড়ি ছেড়ে চলে যাক, সেটাও চাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন