এসআইআর-এর শুনানিতে কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্টকে থাকতে দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। ছবি: পিটিআই।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বুথ স্তরের এজেন্টদের (বিএলএ ২) কোনও ভাবেই এসআইআর-এর শুনানিকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। হুগলির ঘটনার পর জেলাশাসকদের মনে করিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। এজেন্টদের প্রবেশাধিকার নিয়ে তৃণমূল যে চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে, তার সামনে নতিস্বীকার না-করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, শুনানিকেন্দ্রে কোনও দলের এজেন্ট ঢুকলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। আবার, হুগলির মতো শুনানির প্রক্রিয়া আটকে রাখাও যাবে না। জেলাশাসকদেরই তা নিশ্চিত করতে হবে।
রবিবার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেখানেই শুনানিকেন্দ্রে এজেন্টদের উপস্থিতি সংক্রান্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। জানান, এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ। তার পরের দিনই হুগলিতে বিধায়ক অসিত মজুমদার তৎপর হয়ে ওঠেন। চুঁচুড়া-মগড়া ব্লক অফিসে গিয়ে শুনানি বন্ধ করে দেন তিনি। বিএলএ-দের কেন শুনানিতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না, কমিশনের তরফে তার লিখিত ব্যাখ্যা দাবি করেন। প্রায় দু’ঘণ্টা এর জন্য শুনানিপ্রক্রিয়া আটকে ছিল।
এর পরেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে সমস্ত জেলাশাসকের কাছে নির্দেশিকা গিয়েছে। তাতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্টকে শুনানির সময় উপস্থিত থাকতে দেওয়া যাবে না। তার জন্য শুনানিপ্রক্রিয়া বন্ধও রাখা যাবে না। প্রয়োজনে জেলাশাসককে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করতে হবে। বিএলএ-রা যেন শুনানিকেন্দ্রে না ঢোকেন এবং শুনানি যেন বন্ধ না-হয়— দু’টি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে জেলাশাসককে।
চুঁচু়ড়া-মগড়া কেন্দ্র থেকে সোমবার অসিত জানান, অভিষেক এবং মমতা যে ভাবে নির্দেশ দেবেন, তিনি সে ভাবেই লড়বেন। যাকে-তাকে শুনানিতে ডেকে কমিশন সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে। বয়স্ক এবং অসুস্থদেরও লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এই দুর্ভোগ কমানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। এজেন্টরা কেন শুনানিতে থাকবেন না, তার কোনও আইন রয়েছে কি না, দেখতে চান বিধায়ক। শুনানিপ্রক্রিয়া আটকে থাকায় লাইনে দাঁড়ানো ভোটারেরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন। পরে অসিত জানান, মানবিক কারণে তিনি অবস্থান তুলে নিচ্ছেন। কিন্তু পরবর্তী কালে ফের শুনানি বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বর্ধমানের একটি কেন্দ্রেও সোমবার শুনানি ঘিরে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ এবং অশান্তির খবর এসেছে। এজেন্টদের উপস্থিতি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে যে সংঘাতের পথে হাঁটতে চলেছে তৃণমূল, তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। এ বার কমিশনও অনড় অবস্থানের বার্তা দিল।