নজরদার কমিটিতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিশেষজ্ঞ

মিডিয়া সার্টিফিকেশন এবং মনিটরিং কমিটি (এমসিএমসি)-তে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ রাখার নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এমন ব্যবস্থা এ বারেই প্রথম।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক টানাপড়েন কিংবা রাজ্যের ইতিউতি চাঞ্চল্য-উত্তেজনার ক্ষেত্রেও সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব আরও বেশি করে ঘৃতাহুতি দিচ্ছিল। আসন্ন ভোট পর্বে সেটা যাতে বাড়তে না-পারে, সেই জন্য মিডিয়া সার্টিফিকেশন এবং মনিটরিং কমিটি (এমসিএমসি)-তে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ রাখার নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এমন ব্যবস্থা এ বারেই প্রথম।

Advertisement

এমসিএমসি গড়া হয় তিনটি স্তরে। এই বিষয়ে গত সোমবার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারদের (সিইও) কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে কমিশন। তিনটি স্তরের কমিটিতেই সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ রাখতে বলা হয়েছে সেই নির্দেশে। এই ধরনের কমিটি আগে তৈরি হলেও সদস্য হিসেবে পৃথক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তি এই প্রথম। সোশ্যাল মিডিয়ার কোনও তথ্য ভোট পর্বে কমিশনের নিয়মকানুন লঙ্ঘন করেছে কি না, তা বুঝতে এবং পদক্ষেপ করতে কমিটিকে সাহায্য করবেন ওই সদস্যেরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন অনুমোদনের ক্ষেত্রে কমিটিকে সাহায্য করবেন তাঁরা। নজর রাখবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহৃত ‘পেড নিউজ’-এও। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রার্থীর বিজ্ঞাপনের খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার এবং ‘এক্সপেন্ডিচার অবজার্ভার’ বা খরচ দেখার জন্য নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের রিপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করবেন ওই সব সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে কমিটির সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন অভিযোগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে কমিটির সাহায্যকারীর ভূমিকা পালন করবেন ওই বিশেষজ্ঞেরা।

বিশেষজ্ঞ নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মাপকাঠি ঠিক করে দিয়েছে কমিশন। সরকারি অফিসার হলে থাকতে হবে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে পাঁচ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা। বেসরকারি ক্ষেত্রের প্রতিনিধি হলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞকে তথ্যপ্রযুক্তিতে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হতে হবে। তা ছাড়াও সরকারি স্তরে যোগাযোগ আছে, এমন কোনও ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ওই বিশেষজ্ঞের। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার বিশেষজ্ঞের খোঁজ শুরু করেছে রাজ্যের সিইও-র দফতর।

Advertisement

জেলা স্তরে রিটার্নিং অফিসার বা জেলা নির্বাচন অফিসারকে মাথায় রেখে কমিটি তৈরি হবে। রাজ্য স্তরের কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন সিইও। সেখানে থাকবেন কমিশনের মনোনীত পর্যবেক্ষকও। অতিরিক্ত সিইও-র নেতৃত্বাধীন একটি কমিটিও থাকবে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত কোনও বিষয়ে সুয়োমোটো বা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে হস্তক্ষেপ করা হবে কি না, তা নির্ধারণে ভূমিকা থাকবে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞের। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই কমিটি বৈদ্যুতিন এবং মুদ্রণ সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন খবরের উপরে নজরদারি চালাবে। এখন সোশ্যাল মিডিয়া অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তাই বিশেষজ্ঞ রাখা হচ্ছে, যিনি ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়ো খবর থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত সব কিছুর উপরেই নজর রাখবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করতে পারেন তিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন