ছবি: কৌশিক সরকার
মাঝরাস্তায় হঠাৎ ভাড়া-গাড়ি ‘দখল’! ফলে, সোমবার চুঁচুড়ার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার সময় ভুগতে হল ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উঠল হেনস্থার অভিযোগও।
নিজের গাড়ি ওয়ার্কশপে থাকায় যাদবপুরের প্রশান্ত ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ীর থেকে গাড়িটি ভাড়া করেছিলেন ওই আবৃত্তিশিল্পী। ভাইকে নিয়ে এ দিন দিল্লি রোড ধরে চুঁচুড়ায় যাচ্ছিলেন তিনি। ব্রততীর নিজের গাড়ি-চালক রাজা দাসই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গাড়ি শ্রীরামপুরে ঢোকার কিছুটা আগে রাজা বুঝতে পারেন, একটি গাড়ি তাঁদের অনুসরণ করছে। বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গি মোড়ের কাছে পিছনের গাড়িটি ব্রততীর গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। জনাপাঁচেক যুবক নেমে এসে ব্রততীদের জানান, গাড়িটির ইএমআই বাকি। তাই সেটি তাঁরা নিয়ে যাবেন।
ব্রততীর অভিযোগ, ‘‘ওই যুবকেরা আমাদের কোনও কথা শোনেনি। কী ঘটতে চলেছে বুঝতে পারছিলাম না। ভয় করছিল। তবে ওদের এক জন আমাকে চিনতে পারে। আমাকে আর ভাইকে ওদের চালক দিয়ে পৌঁছে দেয়। রাজাকে কিন্তু রেখে দেয়।’’ পরে অন্য গাড়িতে ব্রততীকে কলকাতায় পৌঁছে দেন ওই ঋণদাতা সংস্থার লোকেরাই। ক্ষুব্ধ ব্রততী বিষয়টি শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে জানান। কল্যাণবাবু পুলিশকে জানান। পুলিশ ভদ্রেশ্বরের একটি পার্কিং প্লেস থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে। রাজাকেও থানায় আনা হয়। ব্রততী বলেন, ‘‘গাড়ির ঋণ শোধ হয়েছে কিনা, ভাড়া নেওয়ার সময় কেউ জিজ্ঞাসা করে? মাঝরাস্তায় কেন এ ভাবে নামিয়ে দেওয়া হবে? যা ঘটল, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ওঁরা নিজেদের পরিচয়পত্রও দেখাননি।’’ গাড়ির মালিক প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘অল্প কয়েকটি কিস্তি বাকি আছে। তার জন্য যে ওরা এমন করবে, এক বারও বলেনি। ওদের জন্য ব্রততীদির মতো এক জন শিল্পী অসম্মানিত হলেন।’’
সন্ধ্যায় রাজা শ্রীরামপুর থানায় ওই ঋণদাতা সংস্থার বিরুদ্ধে রাস্তা থেকে জোর করে গাড়ি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ জানান। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়িটি যে রাস্তা থেকে নেওয়া হয়েছে, তা নিয়মমতো ঋণদাতা সংস্থার তরফে লিখিত ভাবে (সিজার লিস্ট) পুলিশকে জানানো হয়েছে। ব্রততীদেবীর চালকের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’