প্ল্যাটফর্মে ধাক্কা খেয়ে বেলাইন খালি লোকাল

কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেনের মাঝখানের একটি কামরা ধাক্কা মারল পাশের ডাউন মিডল লাইনের ওভারহেড তারের খুঁটিতে। মুহূর্তের মধ্যে দুমড়েমুচড়ে গেল ইস্পাতের খুঁটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩১
Share:

দুর্ঘটনা: বেলাইন হয়ে এই ইস্পাতের খুঁটিতেই ধাক্কা মারে একটি খালি ইএমইউ লোকাল। হাওড়ার রামরাজাতলায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

ঘড়িতে বিকেল পৌনে ৪টে। তীব্র গতিতে খড়্গপুর থেকে টিকিয়াপাড়া কারশেডের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে একটি খালি ইএমইউ রেক। রামরাজাতলা স্টেশন পেরোনোর সময় আচমকা বিকট শব্দ আর ধুলোর ঝড়ের মধ্যে দুলতে থাকা ট্রেনের কামরা ধাক্কা খেতে শুরু করল প্ল্যাটফর্মে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেনের মাঝখানের একটি কামরা ধাক্কা মারল পাশের ডাউন মিডল লাইনের ওভারহেড তারের খুঁটিতে। মুহূর্তের মধ্যে দুমড়েমুচড়ে গেল ইস্পাতের খুঁটি।

Advertisement

বেলাইন হয়ে পড়া লোকাল ট্রেনটি যখন থামল, দেখা গেল, কংক্রিটের স্লিপারের উপর দিয়ে কয়েকশো মিটার ছুটেছে লাইনচ্যুত কামরা! ভেঙে গিয়েছে প্যান্টোগ্রাফ। ছিঁড়ে পড়েছে ডাউন লাইন ও মিডল লাইনের ওভারহেড তার। যাত্রী না-থাকায় কেউ হতাহত হননি। তবে সোমবার বিকেলে রামরাজাতলা স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যাওয়া ওই ইএমইউ লোকালে যাত্রী থাকলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের আশঙ্কা।

প্রাণহানি না-ঘটলেও দু’টি লাইনের ওভারহেড তার ছিঁড়ে যাওয়ায় হাওড়ামুখী ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় ভীষণ ভাবে। সমস্যায় পড়েন অফিসফেরত নিত্যযাত্রীদের একটি বড় অংশ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার অনির্বাণ দত্ত দুর্ঘটনাস্থলে যান। মেরামতির কাজ শুরু হয় দ্রুত। তবু বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়। হাওড়ামুখী যশোবন্তপুর দুরন্ত এক্সপ্রেস এবং ইস্ট-কোস্ট এক্সপ্রেস থামিয়ে দেওয়া হয় সাঁতরাগাছি স্টেশনে। স্টিল এক্সপ্রেস ও শিরোমণি প্যাসেঞ্জার সাঁতরাগাছি থেকে রওনা হয়ে যায়। হাওড়া থেকে যাত্রীদের বিভিন্ন ট্রেনে সাঁতরাগাছিতে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে ট্রেন ধরার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু রাত পর্যন্ত হাওড়া ও খড়্গপুরের মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বেলাইন হওয়া কোচটিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। তারও প্রায় এক ঘণ্টা পরে, রাত ৯টা নাগাদ ডাউনের দু’টি লাইনে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয় বলে দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

এমন দুর্ঘটনা ঘটল কী ভাবে? দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “মোটরম্যানের কামরা থেকে সপ্তম কামরা লাইনচ্যুত হয়। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন