শহরের স্বার্থেই জলাভূমি বাঁচানোর আবেদন 

স্বাতীদেবীর মতে, জনপদের নিকাশি শোধনে জলাভূমি অসামান্য ভূমিকা পালন করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিভিন্ন দিক থেকে শহরের উন্নয়ন নিশ্চয়ই চাই। কিন্তু শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না। শহর বাঁচাতে গেলে তার আশপাশের জলাভূমিকেও রক্ষা করতে হবে। আসন্ন বিশ্ব জল দিবস নিয়ে মঙ্গলবার বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সে এক আলোচনাসভায় এই বক্তব্য উঠে এল।

Advertisement

২২ মার্চ বিশ্ব জল দিবস। তার আগে এ দিনের অনুষ্ঠানে পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, ইউনেস্কো-র বক্তব্য, শহরের লাগোয়া জলাভূমিগুলি প্রাকৃতিক ভাবে নিকাশি শোধন করে। তবে সেখানেই তাদের ভূমিকা শেষ হয়ে যায় না। বর্ষার অতিরিক্ত জলও ধারণ করে ওই সব জলাভূমি।

চেন্নাইয়ে ভয়াবহ বন্যার পরে পরিবেশবিদদের পর্যবেক্ষণ ছিল, ওই মহানগরীর আশেপাশে থাকা বিভিন্ন জলাভূমি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাই অতিবৃষ্টিতে শহরের বাড়তি জল ধারণ করার জন্য কোনও জায়গা পাওয়া যায়নি। জলাভূমি ধ্বংসের ফল ভুগতে হয়েছে চেন্নাইবাসীকে। কেরলের বন্যার সময়েও অতিরিক্ত জল ধারণ করার জায়গা ছিল না বলে অনেকের অভিযোগ। বেঙ্গালুরু শহরের ৮৫% জলাশয় দূষিত হয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই উঠে এসেছে পূর্ব কলকাতার বিরাট জলাভূমির কথা। পরিবেশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কলকাতার ঢাল পূর্ব দিকে। স্বাভাবিক ভাবেই শহরের জল সে-দিকে গড়িয়ে যেত। কিন্তু রামসর তালিকাভুক্ত সাড়ে বারো হাজার হেক্টরের এই জলাভূমিও নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পরিবেশবিদেরা বলছেন, শুধু চেন্নাই, কলকাতার মতো মহানগরী সংলগ্ন জলাভূমিই যে বিপন্ন, তা নয়। যে-ভাবে নগরায়ণ বাড়ছে, তাতে জেলা ও মফস্‌সলের জলাভূমির ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শুধু তা-ই নয়, গঙ্গার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নদনদী যে-ভাবে নষ্ট হচ্ছে, অবিলম্বে সেটাও বন্ধ করা দরকার। শহরের স্বার্থে, সামগ্রিক ভাবে নাগরিক-স্বার্থেই নদনদী, খালবিল বাঁচানো প্রয়োজন বলে পরিবেশকর্মীদের অভিমত।

স্বাতীদেবীর মতে, জনপদের নিকাশি শোধনে জলাভূমি অসামান্য ভূমিকা পালন করে। তাঁর বক্তব্য, পূর্ব কলকাতার জলাভূমি মহানগরীর বৃক্কের মতো। তা ছাড়া এই ধরনের জলাশয়গুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করে। পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে ভেড়ি তৈরি করে শুধু যে মাছ চাষ হয়, তা-ই নয়। জলাভূমির জল নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় চাষ-আবাদে সেচের কাজও হয়।

পরিবেশবিদেরা বলছেন, জলের অপচয় এবং দূষণের ফলে জল ক্রমশ কমছে। যেটুকু থাকছে, তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষ জলকষ্টে ভুগবেন। কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহের প্রাক্তন ডিজি বিভাস মাইতি জানান, শহরে জল অপচয় ও জলের দূষণ রুখতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন