চুপিসারে চেনা ঘরে ফিরে এল সচিন

রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, জন্ম থেকেই সচিন ঘেরাটোপে। উন্মুক্ত পরিবেশে ঘুরে নিজে থেকে শিকার ধরে খাওয়ার অভ্যাসই তার নেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

ঘরে ফেরা: সাফারি পার্কের খাঁচায় সচিন। —নিজস্ব চিত্র।

বন্যরা বনে সুন্দর, সচিন সাফারি পার্কে!

Advertisement

চার দিন পরে নিজের চেনা ঘেরাটোপে ঢুকে পড়ে এই কথাই যেন মনে পড়িয়ে দিল পলাতক চিতাবাঘটি, বলছেন সাফারি পার্কের কর্মীরা। কিন্তু সচিনও তো বুনো, তা হলে আপ্তবাক্যে একটু ভুল হয়ে গেল না? তার জবাবে বন দফতরের কর্তা থেকে সাফারি পার্কের কর্মীরা যা বলছেন, তাতেই রয়েছে সচিনের ঘরে ফেরার কারণ।

রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, জন্ম থেকেই সচিন ঘেরাটোপে। উন্মুক্ত পরিবেশে ঘুরে নিজে থেকে শিকার ধরে খাওয়ার অভ্যাসই তার নেই। তাই খিদের জ্বালায় এক সময়ে যে সে ঘরে ফিরে আসবে, এই বিশ্বাস ছিল অনেকেরই। সে কথা মাথায় রেখেই ১০টি খাঁচা পাতা হয়েছিল টোপ ঝুলিয়ে। গত চার দিন ধরে রাতে খোলা রাখা হয়েছিল সচিনদের এনক্লোজ়ারের দরজাও।

Advertisement

তার পর? বনকর্মীদের কথায়, তিন দিন পরে শুক্রবার দুই মেয়ে চিতাবাঘ শীতল আর কাজলকে দর্শকদের সামনে এনে ফের লেপার্ড সাফারি চালু করা হয়েছে। দিনভর ঘুরে বেড়িয়ে ক্লান্ত শীতল আর কাজলকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় সন্ধ্যার একটু আগে। এবং সচিনের ফিরে ফেরার অপেক্ষা আবার এনক্লোজ়ারের দরজা খুলে রাখার তোড়জোড় করছিলেন কর্মীরা। তখন বিকেল সাড়ে চারটে। সাফারি কর্মীদের কথায়, হঠাৎই দেখা যায়, লেপার্ড সাফারির দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকে ঝোপের মধ্যে বসে রয়েছে সচিন।

সেখানে তখন হাজির পার্কের জু কিপার এবং কয়েক জন বনকর্মী। এক বনকর্মী পরে বলেন, ‘‘ওকে দেখেই আমরা চেঁচিয়ে উঠি। ওর নাম ধরে ডাকতে থাকি। টকাটক ছবিও তোলা হয় কয়েকটা।

এ-দিক ও-দিক দেখে এ বার সচিন উঠে দাঁড়ায়। তার পরে ধীর পায়ে এগিয়ে সোজা ঢুকে পড়ে তার রাত্রিকালীন আবাস বা নাইট শেল্টারে। কারণ, সেখানেই রয়েছে জল আর খাবারের ব্যবস্থা। বনকর্মীদের কথায়, শেল্টারে ঢুকেই প্রথমে জল খায় সে। তার চোখেমুখে তখন স্বস্তি।

এই সময়ে বনকর্মীরা লক্ষ করেন, সচিনের মাথার পিছনে, ডান চোখের ধারে ও ডান পায়ে চোট রয়েছে। গাছে চড়ে ১২ ফুটের লোহার বেড়া টপকে পালানোর সময়ে সে জখম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী কিছু দিন সচিনকে শেল্টারে আলাদা করে রেখে চিকিৎসা করতে চান সাফারি পার্কের কর্তারা। দীর্ঘ ১০৮ ঘণ্টা পরে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে। এক বনকর্মী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, ‘‘দেখলেন তো, সচিন কিন্তু সৌরভের সঙ্গেই স্বচ্ছন্দ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন