আঁধারে আলো/৩

সবাই বাঙালি, বলছেন আনিস

সকলকে জনে জনে ফোন করতে শুরু করলেন আনিস। যাঁরা কাজে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বললেন। মঙ্গলবার থেকে আনিস সকলকে একটাই কথা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। বলছেন, ‘‘হিন্দু-মুসলমান আবার কী? আমরা তো সকলে বাংলায় কথা বলি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৭
Share:

অবরোধ: বাদুড়িয়ায় রাস্তা আটকে দিয়েছে জনতা। নিজস্ব চিত্র।

হাজারখানেক মানুষ কাজ করেন তাঁর চিংড়ি প্রসেসিং ইউনিটে। পরোক্ষ ভাবে আরও কয়েক হাজার মানুষ যুক্ত। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে অর্ধেক লোকই গরহাজির।

Advertisement

শাসনের বাসিন্দা আনিস খান কামদুনি মোড়ের কারখানায় এসে দেখেন, কাজ থমকে গিয়েছে। যাঁরা এসেছিলেন কারখানায়, তাঁদের ডেকে পরিস্থিতিটা বুঝতে চাইলেন বছর পঞ্চাশের আনিস। শুনলেন, বসিরহাটে গোলমালে জড়িয়েছেন কারখানার অনেকেই। যাঁদের অনেকেরই বাড়ি বসিরহাট,
বাদুড়িয়া, স্বরূপনগরে।

সকলকে জনে জনে ফোন করতে শুরু করলেন আনিস। যাঁরা কাজে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বললেন। মঙ্গলবার থেকে আনিস সকলকে একটাই কথা বোঝানোর চেষ্টা করছেন। বলছেন, ‘‘হিন্দু-মুসলমান আবার কী? আমরা তো সকলে বাংলায় কথা বলি। বাঙালি, এটাই আমাদের পরিচয়। নিজেদের মধ্যে কোন্দল করে কী লাভ? কাজে না এলে নিজেদেরই পেটে টান পড়বে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পুলিশ বলছে, বন্দুক না থাকলে মানে কে

সকলকে একটাই কথা পই পই করে বোঝাচ্ছেন আনিস, ‘‘নিজের কাজ কর। অন্যকে ভুল বুঝিও না। কেউ গোলমাল পাকাচ্ছে দেখলে, তাদেরও বারণ করো।’’ আরও বলছেন, ‘‘কই, কলকাতা কিংবা অন্য কোথাও তো কেউ কোন্দল করছে না? ওদের কাজকম্ম আছে। তোমরাও নিজের নিজের কাজ করো।’’

আনিসের কথায় কাজ হয়েছে। বুধবার আনিস বললেন, ‘‘পাল্টা ফোন করছে এখন অনেকে। বলছে, শুরুটায় বুঝতে পারিনি। তাই গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিলাম।’’

বুধবারও অবশ্য অনেকেই আসেননি কাজে। তবে তাঁরা অনেকেই আনিসকে ফোন করে জানিয়েছেন, অবরোধে আটকে আছেন। দ্রুত
কাজে ফিরতে চান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement