ভুয়ো মার্কশিট-সার্টিফিকেট দেখিয়ে বিশ্বভারতীর লেকচারার! দোষী প্রাক্তন উপাচার্য

বিশ্বভারতীতে এক সময় তোলপাড় ফেলা সেই দুর্নীতি মামলা শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১২
Share:

দিলীপকুমার সিংহ (ডান দিকে) এবং দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

অধ্যাপিকা হিসাবে নিয়োগ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পিএইচডি করতে চাওয়াটাই কাল হয়েছিল মুক্তি দেবের। তাঁর নথি পরীক্ষা করতে গিয়েই নিয়োগ-দুর্নীতির হদিস পেয়ে যান বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুজিতকুমার বসু। বিশ্বভারতীতে এক সময় তোলপাড় ফেলা সেই দুর্নীতি মামলা শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে। ১৫ বছর পরে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন সুজিতবাবুরই পূর্বসূরি, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপকুমার সিংহ।

Advertisement

তাঁর সঙ্গেই বুধবার বোলপুরে এসিজেএম অরবিন্দ মিশ্র দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন কর্মসচিব দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায় এবং মুক্তি দেব-কে। তিন জনের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র এবং জালিয়াতির একাধিক ধারায় মামলা চলছিল। এক দিন জেল হেফাজতে থাকার পরে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় এই মামলার রায় ঘোষণা হবে।

সূত্রের খবর, ১৯৯৬ সালে বিশ্বভারতীতে ফলিত গণিত বিষয়ে অধ্যাপনার জন্য তফসিলি জাতি ও জনজাতিভুক্ত প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন মুক্তি দেব। নির্বাচন কমিটি তাঁকে ও নন্দলাল বৈরাগীকে বাছাই করে। ১৯৯৭ সালে লেকচারার পদে যোগ দেন মুক্তিদেবীই। পরে তাঁর পদোন্নতিও হয়। ২০০২ সালের ২ এপ্রিল মুক্তিদেবী পিএইচডি করার কথা জানিয়ে বিভাগীয় প্রধানের কাছে আবেদন করেন। তিনি মার্কশিট ও সার্টিফিকেট দেখাতে বলার পরে আবেদনপত্র প্রত্যাহার করেন নেন মুক্তিদেবী। এর পর তৎকালীন উপাচার্য সুজিতকুমার বসুর নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে বিষয়টি জানানো হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসচিব জানান, মুক্তিদেবী বিএসসি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিলেও উত্তীর্ণ হননি! যাদবপুরও জানায়, এমএসসি প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের কোনও পরীক্ষাতেই তিনি উত্তীর্ণ হননি।

Advertisement

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে মুক্তিদেবীকে সাসপেন্ড ও শো-কজ করা হয়। বিশ্বভারতী এক সদস্যের তদন্ত-কমিটি গড়ে। রিপোর্ট পেয়ে কর্মসমিতি ঐকমত্যের মুক্তিদেবীর বিরুদ্ধে মত দিলে ২০০৪-এর ৩০ মে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। ৩১ মে তাঁর বিরুদ্ধে বোলপুর থানায় এফআইআর করে বিশ্বভারতী। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মুক্তিদেবী শিক্ষাগত যোগ্যতার যে প্রতিলিপি জমা দিয়েছিলেন, তাতে সই ছিল দিলীপকুমার সিংহের। মুক্তিদেবী যে দিন বিশ্বভারতীতে যোগদান করেন, সে দিন যাবতীয় মূল নথি দেখে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়ের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন