বিনোদ মুক্ত, ‘ছুটি’তে ডিএম

কাল আসুন, বলে দিল ফালাকাটা থানা

আলিপুরদুয়ার জেলার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ নেওয়া হবে না, এমন নয়। আজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা ছিল। সে কারণে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিন্তু বিনোদের পরিবার পরে আসবেন বলে ফিরে যান।” রাতে অবশ্য আলিপুরদুয়ার থানা থেকে বার হয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে বিনোদ জানিয়ে দেন, এখন আর তিনি বিষয়টি নিয়ে এগোতে চান না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

বিনোদের বাবা রাজমোহন।

আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গিয়ে ফালাকাটা থানা থেকে ফিরতে হল বিনোদ সরকারের পরিবারকে। ফালাকাটা থানার আইসির ঘরে জেলাশাসক নিখিল নির্মল এবং তাঁর স্ত্রী বিনোদকে মারছেন— গত রবিবার থেকে এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতে শুরু করে। বিনোদকে রবিবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে। তার পরে কেন জেলাশাসক এবং তাঁর স্ত্রী থানায় গিয়ে বিনোদকে মারলেন, সেই অভিযোগ দায়ের করতে এ দিন ফালাকাটা থানায় গিয়েছিলেন তাঁর মা। পরিবারের দাবি, সে সময় থানায় থাকা এক পুলিশ কর্মী বলেন, “আজ অফিসারেরা ব্যস্ত, আগামিকাল আসুন।” এ দিন ফালাকাটায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। জেলা পুলিশ সুপার থেকে ফালাকাটার আইসি, সকলেই সভাস্থলের আশেপাশে ছিল। যদিও, আইনজীবীদের দাবি, অভিযোগ নিতে অফিসারদের থানায় থাকা জরুরি নয়।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ নেওয়া হবে না, এমন নয়। আজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা ছিল। সে কারণে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিন্তু বিনোদের পরিবার পরে আসবেন বলে ফিরে যান।” রাতে অবশ্য আলিপুরদুয়ার থানা থেকে বার হয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে বিনোদ জানিয়ে দেন, এখন আর তিনি বিষয়টি নিয়ে এগোতে চান না।

ফালাকাটা শহর লাগোয়া হলেও বিনোদ সরকারের গ্রাম হরিনাথপুরকে প্রান্তিক গ্রাম বলা হয়। আলিপুরদুয়ার কলেজ থেকে বিএ পাশ করা বিনোদ স্থানীয় বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের সুপারভাইজারের কাজ করতেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত অভ্যস্ত বিনোদের বাড়িতে তিনিই একমাত্র রোজগেরে। খেতের আল ধরে দু পাশে সিম বাগান রেখে বিনোদের এক চালা দরমার বাড়িতে পৌঁছতে হয়। গত রবিবার সকালে এক সিভিক ভলান্টিয়ার বিনোদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় বলে পরিবারের দাবি। এ দিন সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায় বিনোদের বাড়ির সামনে জটলা।

Advertisement

সকাল বেলাতেই বিনোদের মা কল্পনা দেবী থানায় গিয়েছিলেন অভিযোগ জানাতে। দুপুরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। কল্পনা বলেন, “এক অফিসার আমাকে বলেন আজ সকলে ব্যস্ত। কাল আসতে হবে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে আসি।”

হরিনাথপুপরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক সুনীল সরকার বলেন, “বিনোদকে ভাল হিসেবেই বরাবর চিনি।” পড়শি শিখা দেবী এ দিন সকাল থেকেই বিনোদের বাড়িতে ছিলেন। তিনি বললেন, “ও (বিনোদ) যদি অপরাধ করে থাকে তবে আইন শাস্তি দিত। থানায় এ ভাবে মারা হল কেন।”

বিনোদের বাবা সত্তর ছোঁয়া রাজমোহন বলেন, “বিনোদকে কেন গ্রেফতার হল, জানি না। আমি শিক্ষিত নই। তবে ডিএম কেন আইন হাতে নিলেন, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন