ভেষজের চাষ

সৃষ্টিকে ঘিরে স্বপ্ন দেখাচ্ছে চন্ডিয়াস

একশো দিনের প্রকল্পে সরকারি পতিত জমিকে সমতল করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ভেষজ ও ফলের এগারো হাজার চারা গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সৃষ্টি’।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৮
Share:

একশো দিনের প্রকল্পে সরকারি পতিত জমিকে সমতল করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ভেষজ ও ফলের এগারো হাজার চারা গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সৃষ্টি’। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, একশো দিনের প্রকল্প এবং জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যানের টাকায় এই প্রকল্পটি রূপায়িত হলে বদলে যাবে গ্রামের অর্থনীতি। এলাকার চারটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মাধ্যমে আদিবাসী-মূলবাসীদের বিকল্প রুজির সন্ধান দেবে এই ভেষদ বাগান। আর তাতেই বিকল্প আয়ের স্বপ্ন দেখছে বেলিয়াবেড়া ব্লকের তপসিয়া অঞ্চলের চন্ডিয়াস গ্রাম।

Advertisement

চন্ডিহাস মৌজায় ১৮ একর সরকারি খাস জমিটি দীর্ঘদিন পতিত পড়েছিল। একশো দিনের প্রকল্পে ওই জমি সমতল করে সেখানে ভেষজ বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতি। বেলিয়াবেড়ার বিডিও কৌশিক ঘোষ জানান, জমিটি সমতল করে চারা লাগানোর উপযোগী মাটি তৈরির করতে গিয়ে আট হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে। উপকৃত হয়েছেন এলাকার প্রায় দেড়শো বাসিন্দা। শ্রমিকদের মজুরি বাবদ ও পরিকাঠামো গড়ার জন্য এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৮ লক্ষ টাকা। গভীর নলকূপ খনন করে সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়ে একটি জলপ্রকল্প করা হয়েছে। এ ছাড়া দু’টি পুকুরও খনন করা হয়েছে।

২২টি প্রজাতির মোট দশ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। ভেষজের মধ্যে রয়েছে অ্যালোভেরা, অশ্বগন্ধা, অশোক, বাসক, আমলকি, হরিতকী বহেড়া, তুলসী, হলুদ ইত্যাদি। এ ছাড়া ল্যাংড়া, আম্রপালী, দু’রকমের কুল, লেবু, লিচু, নাসপাতি, মৌসম্বী, পিচের মতো ফলের গাছও রোপণ করা হয়েছে। রয়েছে পেস্তা ও কোকো গাছও। ১৮ একর জমিটিকে ৩০টি প্লটে ভাগ করে ২৪টি প্লটে চারা রোপণ করা হয়েছে। দু’টি প্লটে দু’টি পুকুর খনন করা হয়েছে। বাকি চারটি প্লটে তৈরি হবে ভেষজ নির্যাস সংগ্রহ কেন্দ্র। একশো দিনের প্রকল্পে স্থানীয় চারটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যরা বাগানটির পরিচর্যার করছেন। স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মাধ্যমে ভেষজ ও ফল বিপণনের ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

কৌশিকবাবু বলেন, “বাগানটির মাধ্যমে এলাকার ৫০টি পরিবারের সারা বছরের আয়ের সুবন্দোবস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভেষজের এক্সট্রাক্ট কালেকশন সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পের আওতায় কেন্দ্রটি চালু করা গেলে আরও বেশ কিছু বাসিন্দার কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে।” স্থানীয় বাসিন্দা মলয় দাস বলেন, “বাগানটি তৈরি হওয়ায় স্থানীয় আদিবাসীরা নিয়মিত কাজ পাচ্ছেন।” বাগানে পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা গুরুবারি হেমব্রম, কাজল সিংহ-রা বলেন, “বাগানে নিয়মিত কাজ পাওয়ায় পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে।” বিডিও’র আশ্বাস, “ফল ধরলে স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসীদের পরিবারে আরও সচ্ছলতা আসবে।” ছবিটি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন