প্রতীকী ছবি।
জমি দিলেও হয়নি কারখানা। তাই সরকার অধিগৃহীত জমিতে ধান চাষ করেন চাষিরা। গ্যাসের পাইপ পাতার জন্য সরকারি সংস্থা ‘গেল’ সেই জমি খুঁড়তে শুরু করায়, ক্ষতিপূরণের দাবিতে পাইপ পাতা বন্ধ করে দিল ‘কৃষিজমি অধিকার রক্ষা কমিটি’। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের দুরমুট গ্রামে মঙ্গলবারের ঘটনা। ফলে, উত্তরপ্রদেশ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত ‘গেল’-এর প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ পাতার প্রকল্পের কাজে বিঘ্ন হল।
মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘পাইপ পাতার কাজ অধিগৃহীত জমিতে হলেও মানবিকতার খাতিরে কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ ‘গেল’-এর একটি সূত্রের খবর, ওই প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের বিভিন্ন এলাকার কারখানায় সস্তায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হবে। রূপায়িত হলে প্রকল্পটি এ রাজ্যেও শিল্পে গতি আনতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই গ্যাস পরিবহণ শিল্পে এবং গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডের অনেকাংশে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে গিয়েছে। হলদিয়া পর্যন্ত পাইপ পাতার কাজ দ্রুত সারার চেষ্টা চলছে। তার মধ্যে রঘুনাথপুরের এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে প্রশাসনের।
বছর দশেক আগে ইস্পাত এবং অনুসারী শিল্পের জন্য ওই এলাকায় প্রায় ১,৮০০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগম (ডাব্লিউবিআইডিসি)। জমিদাতা প্রায় পাঁচ হাজার। প্রশাসন সূত্রের দাবি, ইস্পাতের পর্যাপ্ত বাজারের অভাবের কারণ দেখিয়ে ওই এলাকায় কারখানা গড়েননি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা। কারখানা হওয়ার জন্য বছর দু’য়েক অপেক্ষা করে, শেষ পর্যন্ত ২০১০-১১ থেকে ওই জমিতে চাষ করে আসছেন জমিদাতাদের একাংশ।
দুরমুট ও হুড়রা গ্রামে ওই অধিগৃহীত জমি খুঁড়েই মাসখানেক আগে পাইপ পাতা শুরু করে ‘গেল’। তাতে জমির ধান নষ্ট হওয়া ও উর্বরা শক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় আগামী পাঁচ বছরের ফসলের ক্ষতিপূরণ চেয়ে দাবি তুলছে নতুনডি অঞ্চলের ‘কৃষিজমি অধিকার রক্ষা কমিটি’। কমিটির তরফে মণিলাল মাজি, শক্তিপদ মাজিদের বক্তব্য, কারখানার জন্য জমি দিয়েও কর্মসংস্থান হয়নি বলে ওই জমিতে চাষ করেন তাঁরা। কিন্তু পাইপ পুঁততে ‘গেল’ ৩০ মিটার চওড়া ও সাত ফুট গভীর গর্ত করায় এবং জমিতে মাটি কাটার গাড়ি যাতায়াত করায় ধান নষ্ট হচ্ছে।