গোলাপি আনাজে রাতের টর্চ, বর্ষাকালীন পেঁয়াজ পাহারায় রাত জাগছেন চাষিরা

মাঝ বর্ষায় লাগানো সেই পেঁয়াজ ওঠার সময় শেষ-হেমন্ত।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

রাত জেগে পেঁয়াজ পাহারা। হরিহরপাড়ার হুমাইপুরে। নিজস্ব চিত্র

দেড়শো ছুঁয়েও ঝাঁঝ কমেনি তার। হরিহরপাড়ার আশপাশে বাজারে বৃহস্পতিবার সকালেও পেঁয়াজে হাত দিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের শুনতে হয়েছে, ‘আজও দেড়শো টাকা কেজি, কাল ১৬০ হতে পারে!’

Advertisement

মহার্ঘ সেই গোলাপি আনাজে হাত পুড়িয়ে মাথা নিচু করে ফিরে আসা আমবাঙালির সেই সাধের পেঁয়াজ এখন রাত প্রহরায়।

স্থানীয় চাষিরা বলছেন, ‘‘দাম তো আকাশ ছুঁতে চলেছে বাবু, রাত বিরেতে খেতের পেঁয়াজ যে বেহাত হবে না, তা কে বলতে পারে!’’

Advertisement

হরিহরপাড়ার আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামে তাই বর্ষাকালীন পেঁয়াজ পাহারায় রাত জাগছেন চাষিরা।

মাঝ বর্ষায় লাগানো সেই পেঁয়াজ ওঠার সময় শেষ-হেমন্ত। বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়চড় করে উঠতে শুরু করায় খেতের অপরিণত পেঁয়াজও তুলতে শুরু করেছেন হরিহরপাড়ার আবাদি মানুষ। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘এমন দাম তো কখনও ওঠেনি, তাই ফেলে না রেখে পেঁয়াজ তোলা শুরু করেছি। যদি বাড়তি কিছু দাম মেলে।’’ বাড়তি লাভের আশায় সেই অপরিণত পেঁয়াজ সাত সকালে ট্রাক্টরে চেপে ছুটছে বাজারের দিকে। তবে চাষিদের অনেকেই এখনও ক’দিন অপেক্ষা করার পক্ষপাতী। তবে খোলা মাঠে সেই মূল্যবান আনাজ কখনও ফেলে রাখা যায়! রাত জেগে তাই পাহারায় নেমেছেন চাষিরা।

আরও পড়ুন: ‘নববর্ষে সস্তা হবে পেঁয়াজ’

জমির এক কোণে ত্রিপল টাঙিয়ে লাঠি, টর্চ, হাঁসুয়া নিয়ে রাত জাগছেন তাঁরা। জাতীয় সড়কের দু’পাশে হুমাইপুর, প্রদীপডাঙা, নিশ্চিন্তপুরের কোল ঘেঁষে গেলে সার দিয়ে পেঁয়াজ খেত। সে পথে গেলেই চোখে পড়ছে কোথাও মশাল জ্বেলে কোথাও বা টর্চের আলোয় জেগে রয়েছে মাঠ।

হুমাইপুরের চাষি বসিরুদ্দিন মণ্ডল বলছেন, ‘‘আর ক’টা দিন রেখে দিলে পেঁয়াজের ঝাঁঝই বদলে যাবে। দামও মিলবে ভাল। তাই দু’-চার দিন দেখে তার পরে পেঁয়াজ তুলব। কিন্তু এমন দামি জিনিস কি খেতে ফেলে রাখা যায়! তাই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।

প্রদীপডাঙার সারাফত শেখ কিংবা নিশ্চিন্তপুরের মধুমঙ্গল মণ্ডলের কথায়, ‘‘রাত বিরেতে ট্রাক নিয়ে এসে খেত সাফ করে পেঁয়াজ তুলে নিয়ে যেতে পারে। তাই রাত না জেগে উপায় কী!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন