প্রবল জ্বরে কাঁদছিল বলে বাবার চড়ে মৃত্যু সাত মাসের মেয়ের!

জ্বরে ছটফট করছিল সাত মাসের মেয়েটি। কান্নাও থামতে চাইছিল না তার। আর তাতেই রেগে গিয়ে মেয়েকে এক চড় কষায় বাবা। চড় খেয়ে খাট থেকে পড়ে জখম হয় শিশুটি। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে মৃত্যু হয় ওই শিশুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৩০
Share:

জ্বরে ছটফট করছিল সাত মাসের মেয়েটি। কান্নাও থামতে চাইছিল না তার। আর তাতেই রেগে গিয়ে মেয়েকে এক চড় কষায় বাবা। চড় খেয়ে খাট থেকে পড়ে জখম হয় শিশুটি। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে মৃত্যু হয় ওই শিশুর।

Advertisement

উত্তেজিত জনতা মেয়েটির বাবা সমীর মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন। ভাঙচুর করা হয় তার বাড়ি।

শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাসনাবাদের আবাদকুলিয়াডাঙা গ্রামের। পুলিশ জানিয়েছে, সমীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সমীর পেশায় ভ্যানচালক। এ দিন তাকে এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক চোদ্দো দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বাসিন্দা নীলিমার সঙ্গে বিয়ে হয় সমীরের। বিয়ের পর থেকেই নীলিমার উপর সমীর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। মেয়ে হওয়ায় অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার মেয়ে মনীষার জ্বর হয়। ওই দিনই মেয়ের কান্নায় রেগে গিয়ে সমীর চড় মারে বলে অভিযোগ। খাট থেকে পড়ে গিয়ে ওই শিশুর নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরোয়। এরপরেই নীলিমা তাকে নিয়ে টাকি হাসপাতালে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। শুক্রবার গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বাবার চড়ে খাট থেকে পড়ে গিয়েই মনীষার মৃত্যু হয়েছে। ক্ষিপ্ত জনতা সমীরের বাড়ি ভাঙচুর চালায়।


মৃত শিশুর মা নীলিমা মণ্ডল। ইনসেটে ধৃত সমীর মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালের এক কর্মী ওই মহিলাকে বসিরহাট থানায় নিয়ে আসেন। সেখানে এক পুলিশ অফিসার নীলিমার খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করেন। নীলিমার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করে। নীলিমা বলেন, ‘‘কন্যা সন্তান হওয়ায় রাগ আরও বেড়ে গিয়েছিল সমীরের। এমনিতেই মেয়েটি অসুস্থ ছিল তার মধ্যে ওর বাবার চড়ে খাট থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে জখম হয়।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে সমীর বলে, ‘‘টাকা জোগাড় করতে দেরি হওয়ায় মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারিনি। সে কারণে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ তবে নীলিমার শ্বশুর শাশুড়ি জানান, বৌমা কোনও ভাবেই মিথ্যা অভিযোগ করেননি। কিন্তু সে সময় তাঁরা বাড়ি ছিলেন না। ছেলে ঠিক বলছে না বলে তাঁদের দাবি। কিন্তু গ্রামবাসীরা বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় তাঁরা চিন্তিত।

গ্রামবাসীরা জানান, এর আগেও সমীরের দুটি বিয়ে হয়েছিল। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁরা চলে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন