মৃত্যুর জেরে হোটেল বন্ধ কার্শিয়াঙে

যত কাণ্ড যেন কার্শিয়াঙেই! বৃহস্পতিবার আগুনে পুড়ে গেল পাঙ্খাবাড়ির ঐতিহ্যমণ্ডিত মকাইবাড়ি বাংলো। চা দুনিয়া সেই শোক সামলে ওঠার আগে শুক্রবার সাময়িক ভাবে তালা পড়ল এই রাস্তার উপরেই শতাব্দী প্রাচীন এক হোটেলে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:০২
Share:

বিধ্বংসী: চা বাগানের বাংলোতে আগুন। ফাইল চিত্র

যত কাণ্ড যেন কার্শিয়াঙেই!

Advertisement

বৃহস্পতিবার আগুনে পুড়ে গেল পাঙ্খাবাড়ির ঐতিহ্যমণ্ডিত মকাইবাড়ি বাংলো। চা দুনিয়া সেই শোক সামলে ওঠার আগে শুক্রবার সাময়িক ভাবে তালা পড়ল এই রাস্তার উপরেই শতাব্দী প্রাচীন এক হোটেলে। কারণ, গত এক সপ্তাহে দু’জনের রহস্যমৃত্যু এবং দু’জনের অসুস্থ হয়ে পড়া। নেপথ্য কাহিনি খুঁজতে গিয়ে কেউ বলছেন, দুর্ঘটনা। কেউ জড়োসড়ো ভূতের ভয়ে। রহস্যের কিনারা না হওয়া অবধি হোটেলটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।

‘টাউন অব স্কুলস’ কার্শিয়াং যা কিছু নিয়ে গর্ব করতে পারে, সেই তালিকায় মকাইবাড়ি চা বাগান ও পাঙ্খাবাড়ি রোডের উপরে এই হেরিটেজ হোটেলটি অন্যতম। বোড়াইয়ের জমিদার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের হাতে তৈরি মকাইবাড়ি বাগানের চা না পেলে ফেলুদার মগজাস্ত্র খোলে না। এই বাগানের চা ‘কালাপানি’ পেরিয়ে বাকিংহাম প্যালেসেও যায়। এ হেন বাগানের বর্তমান কর্ণধার রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঠের সুদৃশ্য বাংলোটি ঠাসা ছিল স্মারক ও দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহে। শ’খানেক দেশে থেকে পাওয়া স্মারক, দুষ্প্রাপ্য বই, ছবি, বাঘ ছাল, বাইসনের মাথা, দার্জিলিঙের নানা দুর্মূল্য বস্তু— কী ছিল না সেখানে! সে সবের বেশির ভাগ পুড়ে যাওয়ার খবরে স্তম্ভিত নীরজ লামার মতো আমেরিকা প্রবাসী চা প্রেমীরা। সেখান থেকে তাঁর বার্তা, ‘‘ইস! ভাবতেই পারছি না। পাঙ্খাবাড়ি রোডের ওই বাগান ও আর হোটেলটির টানেই দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক কার্শিয়াঙে যান।’’ মকাইবাড়ির আগুনে অবশ্য বিশেষ রহস্য দেখছে না পুলিশ। দার্জিলিঙের এসপি অমিত জাভালগি বলেছেন, ‘‘সর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে অনেকটাই স্পষ্ট। কিন্তু, ওই হেরিটেজ হোটেলে মৃত্যু রহস্যের কিনারা এখনও হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: তাজমহল ওড়ানোর হুমকি দিল আইএস

কী হয়েছে পাঙ্খাবাড়ির ওই হেরিটেজ হোটেলটিতে? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ মার্চ সেখানে ব্যাঙ্কক থেকে আসা ছাত্র কোয়েতসিরি কুনং-কে (১৫) নীচতলার একটি ঘরের শৌচাগারের সামনে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পাশের ঘরের শৌচাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ে আরও দুই কিশোর। শুক্রবার সকালে নীচতলার একটি ঘরের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় বিকাশ বিশ্বকর্মার (২৫) অচৈতন্য দেহ। ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয় তাঁর দেহ। রিপোর্ট পেলেই খুলবে রহস্যের জাল। তারই অপেক্ষায় সকলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন