স্কুলে সপ্তাহে তিন দিন নিয়ম মাফিক খেলার ক্লাস হয়। কিন্তু তার বাইরেও পড়ুয়াদের আরও বেশি করে খেলার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে উদ্যোগী হল কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন (আইএসসিই)। তাই এ বার প্রথম কেন্দ্রের ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে কাউন্সিলের বিভিন্ন স্কুল। তার প্রস্তুতিতে গত বুধবার থেকে কলকাতায় ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজনও করেছিল তারা।
কাউন্সিলের এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য তথা বরাহনগরের সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের অধ্যক্ষ নবারুণ দে জানান, বুধবার থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের অনুশীলন মাঠে তিন দিনের অনূর্ধ্ব ১৬ এবং অনূর্ধ্ব ১৮ ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়। বিভিন্ন রাজ্য ও দেশের বাইরে থেকেও প্রায় চারশো পড়ুয়া এসেছিল। সদ্য শেষ হওয়া অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে কলকাতার স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনাও তৈরি হয়েছে। তাকেই আরও একটু উস্কে দিতেই এই পদক্ষেপ, বলে জানান তিনি।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ কমে গিয়ে কম বয়সে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। মাঠে নেমে খেলার বদলে অনলাইন খেলার প্রতি ক্রমশ ঝোঁক বাড়ছে পড়ুয়াদের। যার জেরে অনেক সময় নীল তিমির মতো মারণ খেলার খপ্পড়েও পড়ছে পড়ুয়ারা। এ সব থেকে মুক্তির পথ খেলা। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি দূরের জেলা থেকেও ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে পড়ুয়াদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এতে তাদের মধ্যে মাঠে নেমে খেলার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। একই ভাবে ইংরেজি মাধ্যমের এই কাউন্সিল (যার অধীনে আইসিএসই ও আইএসসি পরীক্ষা হয়) ফুটবল খেলার আয়োজন করায় পড়ুয়াদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, পড়ুয়াদের মধ্যে খেলার প্রবণতা কমছে বলেই স্থুলতা বাড়ছে, ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপের সমস্যা হচ্ছে। খেলা এবং শরীরচর্চার মাধ্যমেই শিশুরা সুস্থ থাকবে। তাঁর আক্ষেপ, বর্তমানে বহু স্কুলেই খেলার মাঠ থাকে না। পঠনপাঠনের চাপে পড়ুয়ারা খেলার সময়টুকুও পায় না। সেটা আগে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি স্কুলেরই উচিত শিশুদের খেলা ও শরীরচর্চার জন্য প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময় ধার্য করা।’’
আইএসসিই কাউন্সিলের তরফে এক কর্তা জানান, প্রতি সপ্তাহে তিন দিন করে খেলার ক্লাস রাখা হয়। ক্লাস শেষ হওয়ার পরেও ইচ্ছুক পড়ুয়াদের খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। শহরের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা অবশ্য মানছেন, ইচ্ছা থাকলেও পঠনপাঠনের চাপে তাঁরা সন্তানদের খেলায় উৎসাহ দিতে পারেন না।
লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয় ধর বলেন, ‘‘আমরা খেলার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিই। স্কুলে এ ধরনের নানা প্রতিযোগিতা হয়। এই খেলা পড়ুয়াদের মধ্যে আরও আগ্রহ বাড়াবে।’’