চোরাশিকার রুখতে হাজির বেলজিয়ান কুকুর

এ দেশে ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডের সঙ্গে বেলজিয়ামের ফ্লেমিশ এলাকার কুলীন সারমেয়কে দেখা গিয়েছে আগেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৮
Share:

কেরামতি: বুধবার সল্টলেকের বনবিতানে।   ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

ধনুকের মতো বাঁকানো পিঠ। ছিপছিপে, টানটান! হঠাৎ আছড়ে পড়া কালচে সোনালি ঝড়ের মুখে টাল সামলাতে নাস্তানাবুদ এমনকী ওস্তাদ ‘হ্যান্ডলার’-ও!

Advertisement

এ দেশে ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডের সঙ্গে বেলজিয়ামের ফ্লেমিশ এলাকার কুলীন সারমেয়কে দেখা গিয়েছে আগেই। মার্কিন গোয়েন্দাদের লাদেন শিকারেও কেরামতি দেখিয়েছিল এই সাহসী কুকুর। এ বার বাংলার জঙ্গলে চোরাশিকার চক্র নিকেশ করতেও হাতিয়ার বেলজিয়ান ম্যালিনোয়া। মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে তাদের ব্যবহার করা হয়েছে আগেই। এ-যাত্রা সল্টলেকের বনবিতানে একটি অনুষ্ঠানে বন দফতরের কর্তারা একটি বেলজিয়ান ম্যালিনোয়া কুকুরকে তাঁদের পরিবারভুক্ত করে নিলেন। সে অবশ্য একা নয়, তার দোসর এক জোড়া জার্মান শেফার্ডও। তিন জনেরই বয়স ১৩-১৫ মাস।

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড অধিকর্তা নীলাঞ্জন মল্লিক বুধবার বললেন, ‘‘বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে সক্রিয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সদ্যযুবক তিনটি কুকুর বন দফতরের হাতে এসেছে।’’ ওই দফতর সূত্রের খবর, জলদাপাড়ার অভয়ারণ্যের জন্য রানি নামে একটি জার্মান শেফার্ডকে আগেই আনা হয়েছে। সুন্দরবন ও বক্সার জঙ্গলের জন্য আসছে ইকনা ও লিমসি ওরফে সুইটি নামে দু’টি জার্মান শেফার্ড। সুকনার জঙ্গলের জন্য উপহার বেলজিয়ান ম্যালিনোয়া কুকুর ‘করিম’। গ্বালিয়রে বিএসএফের তালিম কেন্দ্রে সদ্য প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছেন ছ’জন ‘হ্যান্ডলার’ বা কুকুর-প্রশিক্ষক। তালিম নিয়ে তৈরি তিন সারমেয়ও পৌঁছে গিয়েছে কলকাতায়। বুধবার রাতেই তারা তিন গন্তব্যে রওনা হয়ে গিয়েছে। বনবিতানে দেখা গেল, ব্যক্তির গন্ধ শুঁকে তাঁর ব্যবহৃত জিনিস খুঁজে আনা বা রুমালের গন্ধ শুঁকে লোকটিকে খুঁজে বার করতে বেশ তুখোড় ইকনা, লিমসি ও করিম। ছড়ানো কিছু সামগ্রীর মধ্যে লেপার্ডের ছাল কোথায়, তা-ও শুঁকে শুঁকে খুঁজে বার করল তারা। সব থেকে তেজীয়ান বেলজিয়ান ম্যালিনোয়া। তিন জনেই সকালে খায় দুধ, ভাত, লাউ-কুমড়ো-পালংশাক-বিট-গাজর আনাজপাতি, ডিম। বিকেলে দালিয়া, আনাজপাতি ও খাসির মাংস। দিনভর টুকটাক ‘ডগবিস্কুটের মতো খাবার ছাড়া কিছুতে তাদের রুচি নেই।

Advertisement

বন দফতরের কর্তাদের দাবি, জঙ্গলের জল-কাদা-ঢালু-সমতলে এই সারমেয়রা বেশ স্বচ্ছন্দ। প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিনহা বললেন, ‘‘চোরাশিকারের বিরুদ্ধে শক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে দ্রুত আরও তিন-চারটি কুকুর নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন