শুধু মৌখিক প্রতিশ্রুতি নয়, রেলের নামে খোলা হয়েছিল ভুয়ো ওয়েবসাইট। এমনকী, লোক ঠকাতে সরকারি হাসপাতালের চত্বরে বসানো হতো ভুয়ো ডাক্তারি পরীক্ষার আসরও! শুক্রবার রাতে সোনারপুর রেল কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকা থেকে একটি প্রতারণা চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করার পর এমনটাই দাবি করছে সিআইডি। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের কাছ থেকে জাল নিয়োগপত্র-সহ বহু নথি উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা এই চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। এখনও পর্যন্ত এই চক্রের কেউ
রেলের সঙ্গে জড়িত নয় বলে সিআইডি জানায়।
গোয়েন্দারা জানান, ধৃতদের নাম রাজেন সাউ, রাজেন মিশ্র, হর্ষনারায়ণ ঝা, সুনীল ওরফে মুকেশকুমার এবং অভিষেক ঝা। অভিষেক, রাজেন মিশ্র এবং হর্ষনারায়ণের বাড়ি বিহারে। বাকিরা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। সিআইডির দাবি, ভিন রাজ্যের যুবক-যুবতীদের রেলের গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের টোপ দিয়ে এ রাজ্যে নিয়ে আসা হতো। লোক ঠকাতে অভিযুক্তেরা ‘আরআরবি রেজাল্টস’ নামে একটি ভুয়ো ওয়েবসাইটও খুলেছিল। প্রথম দফায় টাকা নেওয়ার পরে সেই ওয়েবসাইটে নিয়োগের তালিকা বেরোত।
সিআইডির দাবি, তালিকা প্রকাশের পরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ডেকে পাঠানো হত চাকরিপ্রার্থীদের। তার আগে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য এনআরএস হাসপাতাল চত্বরের একটি পরিত্যক্ত জায়গা বেছে নিত অভিযুক্তেরা। একটি সরকারি হাসপাতালের চত্বরে কী ভাবে ভুয়ো ডাক্তারি পরীক্ষা করা হতো, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই হাসপাতালের কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না, তা নিয়েও খোঁজ শুরু হয়েছে।
সিআইডি সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে রাজস্থানের এক যুবক সোনারপুর থানায় এই চক্রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। প্রতারকদের একটি ফোন নম্বরও তিনি পুলিশকে দেন। সেই খবর পেয়ে সিআইডির এডিজির রাজেশ কুমারের নির্দেশে গোয়েন্দাদের একটি দল তদন্তে নামে। এ বার এক গোয়েন্দা অফিসার নিজেকে চাকরিপ্রার্থী পরিচয় দিয়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই ফাঁদে পা দিতেই ধরা পড়েন ওই পাঁচ জন।