শিক্ষারত্ন এ বার বাছবেন পার্থই

শিক্ষক দিবসের আগে-পরে শিক্ষারত্নের প্রাপক মনোনয়ন নিয়ে যে-ভাবে অভিযোগ উঠেছে, তা ভাল চোখে দেখছেন না শিক্ষামন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:২৮
Share:

শিক্ষারত্ন: নজরুল মঞ্চে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে তাঁকে প্রণাম করলেন তারাপদ সাঁতরা। রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। ছবি: প্রদীপ আদক

অনলাইনে প্রার্থী-শিক্ষকদের তরফে আবেদনের পরিকল্পনা করেও শিক্ষারত্ন সম্মানের প্রাপক বাছাই নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনা এড়ানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় আগামী বছর থেকে ওই পুরস্কারের প্রাপক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকার আরও কড়া হতে চাইছে। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, শিক্ষারত্ন বাছাইয়ের বিষয়টি এ বার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সরাসরি নিজেই দেখতে চাইছেন।

Advertisement

শিক্ষক দিবসের আগে-পরে শিক্ষারত্নের প্রাপক মনোনয়ন নিয়ে যে-ভাবে অভিযোগ উঠেছে, তা ভাল চোখে দেখছেন না শিক্ষামন্ত্রী। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষারত্ন দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের যোগ্যতা, দক্ষতা-সহ সামগ্রিক বিষয় আরও ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। শিক্ষক দিবসের অন্তত দু’মাস আগে শিক্ষকদের কাছে থেকে তাঁদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তার পরে সব প্রার্থীর তথ্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবদের সঙ্গে বসে শিক্ষামন্ত্রী পুরো বিষয়টি যাচাই করবেন।

আরও পড়ুন: উন্নয়ন ফি মকুবের ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর

Advertisement

এ বারের শিক্ষারত্ন প্রাপক বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে সোমবারেই প্রশ্ন তোলে সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতি। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর অভিযোগ, সরকারি স্কুলগুলিতে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ছাত্র ভর্তির ঘটনা ঘটছে কয়েক বছর ধরে। এর পিছনে এলাকার কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতা এবং স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের হাত থাকে। যে-সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক এই সব অনিয়ম নতমস্তকে মেনে নিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেরই হাতে উঠছে শিক্ষারত্ন পুরস্কার। আর যাঁরা স্কুলে নানা ধরনের অস্বচ্ছতার প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের অনেকের ঘাড়ে নেমে আসছে বদলির খাঁড়া।

কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে সম্প্রতি বিধাননগর সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। এই প্রেক্ষিতেই শিক্ষারত্ন সম্মান বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক-নেতা সোমবার সৌগতবাবু। তাঁর অভিযোগ, সরকারি স্কুল থেকে শিক্ষারত্ন প্রাপকদের অনেকেই নিজের লেখা বইয়ের ব্যবসা এবং প্রাইভেট টিউশনের সঙ্গে যুক্ত। সৌগতবাবুর বক্তব্য, কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে বিধাননগর সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ তাঁর বিরদ্ধে যে-সব অভিযোগ উঠেছে, সহকারী প্রধান শিক্ষক তারাপদ সাঁতরা তার দায় এড়াতে পারেন না। কেননা সুকুমারবাবুর আগে তিনি দু’দফায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন। সেই তারাপদবাবু মঙ্গলবার
নজরুল মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে শিক্ষারত্ন ইনাম নিয়েছেন। এখনও সাসপেনশনের চিঠি হাতে পাননি সুকুমারবাবু। তবে তার আগেই তিনি সোমবার বিকাশ ভবনে গিয়ে তাঁর সার্ভিস বুক জমা দিয়ে এসেছেন।

‘‘ওই স্কুলের পুরো বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব,’’ এ দিন আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement