বছর খানেকের শিশুটি তখন খাটে শুয়ে পরিত্রাহী কাঁদছে। দুধের শিশুর গলায় রাম দা ঠেকিয়ে রেখেছে এক দুষ্কৃতী। তারই এক সাগরেদ শিশুটির মাকে টানতে টানতে নিয়ে যায় বাড়ির বাইরে ঝোপের আড়ালে। ছেলেকে খুনের হুমকি দিয়ে বছর তেইশের মহিলাকে সেখানেই ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার হরিহরপুরের মাঝেরপাড়ায়। এলাকাটি বাংলাদেশ-লাগোয়া। এই জেলারই আর এক প্রান্ত মধ্যমগ্রামের রাজবাটী এলাকায় ক’দিন আগেই সাড়ে তিন বছরের ছেলের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে খুনের
হুমকি দিয়ে মাকে ধর্ষণ করেছিল তিন দুষ্কৃতী। কয়েক বছর আগে রাজ্যে শোরগোল ফেলে দেওয়া কাটোয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে বালিকার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বিধবা মাকে ধষর্ণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। বাগদার ঘটনায় অভিযুক্ত রমজান মণ্ডল ও সরি মণ্ডল পলাতক। তাদের বাড়ি ওই গ্রামেই। দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক জন সরাসরি ধর্ষণে জড়িত বলে অভিযোগ থাকলেও যেহেতু অন্য এক জন এই কাজে সাহায্য করেছে, তাই এ ক্ষেত্রে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। পরে মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। আজ, বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে।
ঘটনার বীভৎসতায় আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষ। মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, অনেক কাকুতি-মিনতি করেছিলেন। কিন্তু ছেলের গলায় রাম দা ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দিচ্ছিল এক জন। ওই বধূর কথায়, ‘‘আমার ছেলেটা চিৎকার করে কাঁদছিল। আর আমাকে হাত ধরে টেনে আর এক জন দরজার বাইরে নিয়ে যায়। আমার উপরে অত্যাচার করে পালায় ওরা।’’
ঘটনার সময়ে মহিলার স্বামী অন্য কাজে বেরিয়েছিলেন। এ দিন গ্রামে এসেছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা দু’জনেই এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী।’’