ম্যুরালে মন মজেছে পুণ্যার্থীদের

গঙ্গাসাগরের মেলামাঠের চেহারা আগের থেকে অনেক বদলে গিয়েছে। এ বার কি বদলাচ্ছে ভিড়ের চেনা চরিত্রও?

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

সাগর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৬
Share:

মোবাইলবন্দি: শনিবার গঙ্গাসাগরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

গঙ্গাসাগরের মেলামাঠের চেহারা আগের থেকে অনেক বদলে গিয়েছে। এ বার কি বদলাচ্ছে ভিড়ের চেনা চরিত্রও?

Advertisement

এত দিন গাঁ-গঞ্জ থেকে আসা দেহাতি লোকজন সাগরসঙ্গমে ডুব দিয়ে পুণ্য অর্জনেই মন দিতেন বেশি। ফাঁকায় ফাঁকায় সকাল-সন্ধে হত্যে দিতেন কপিল মুনির মন্দিরে। কিন্তু শনিবার দেখা গেল, মন্দির নয়, জনতার মন মজেছে ম্যুরালে! পৌরাণিক দেবতার সামনে কেউ সিঁথিতে সিঁদুর দিচ্ছেন, কেউ বা মাথায় ছিটোচ্ছেন গঙ্গার জল। কেউ মজছেন দেবতার সঙ্গে নিজস্বী তোলায়!

সপ্তাহ দুয়েক আগে সাগরমেলার প্রস্তুতি সফরে এসে কপিলমুনি আশ্রমের পাশেই ম্যুরাল পার্কের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ম্যুরালের পাশাপাশি বাংলা, ইংরাজি ও হিন্দিতে লেখা রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি। কপিল মুনির আশ্রম ছেড়ে সেই পার্কেই যেন ভিড় উপচে পড়ছে। সামনেই ফাইবার দিয়ে গড়া শিবের মূর্তি। জটা থেকে নেমে আসছে ‘পুণ্যতোয়া গঙ্গা’। পুণ্যলোভী দেহাতি ভিড় সেই জলও মাথায় ছিটোচ্ছে!

Advertisement

নেপাল থেকে পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে এ দিন সকালেই সপরিবার সাগরে এসেছেন রামমাধব সিংহ। গত পাঁচ বছর ধরেই আসছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন কেবল গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যস্নানের জন্যই আসতাম। ম্যুরাল পার্ক দেখে বছরের অন্যান্য সময়েও আসতে ইচ্ছা করছে। গঙ্গাসাগর নিয়ে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে পৌরাণিক ব্যাখ্যা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’’ ম্যুরালে দেবদেবীদের ‘গপ্পো’ পড়ে উচ্ছ্বসিত আসানসোলের কিশোরী মোনালিসা দত্ত। সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়া বলে, ‘‘কপিলমুনি ও গঙ্গাসাগর নিয়ে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যে মোড়া পৌরাণিক কাহিনি পড়ে অনেক অজানা তথ্য জানলাম।’’

সাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনিবাহী আধিকারিক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেল থেকে ম্যুরাল পার্কে এতটাই ভিড় বেড়েছে যে দেওয়ালচিত্রের সামনের বাঁশের ব্যারিকেড আমাদের খুলে দিতে হয়েছে।’’ তবে ম্যুরাল দেখতে জনতার এই ঢলকে সাগরে পর্যটন বিকাশের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন সাগরমেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত, রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন গঙ্গাসাগর বলতে কেবল কপিলমুনির আশ্রম ও সমুদ্রতট বোঝাত। এ বার ম্যুরাল পার্ক তৈরি হওয়ায় সারা বছর ধরেই ভিড় টানবে। গঙ্গাসাগর এখন পর্যটনের তীর্থভূমি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন