গড়বেতা কলেজে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম টিএমসিপি-র ৭

শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া বার্তা দিচ্ছেন। তা-ও ভর্তির মরসুমে কলেজে অশান্তি রোখা যাচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৮:৩৫
Share:

জখম আশিস চালক। মেদিনীপুর মেডিক্যালে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া বার্তা দিচ্ছেন। তা-ও ভর্তির মরসুমে কলেজে অশান্তি রোখা যাচ্ছে না।

Advertisement

শুক্রবার নদিয়ার মাজদিয়া কলেজে শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই টিএমসিপি-র গোষ্ঠী সংঘর্ষে তেতে উঠল গড়বেতা কলেজ। শনিবার পাস কোর্সে ভর্তি চলাকালীন ক্যাম্পাসেই মারামারিতে জড়ায় দু’পক্ষ। জখম হন সাত জন। আশিস চালক নামে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের আঘাত গুরুতর। প্রথমে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু মাথায় আঘাত থাকায় রাতে আশিসকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গড়বেতা কলেজের অধ্যক্ষ হরিপ্রসাদ সরকার বলেন, ‘‘একটা গোলমাল হয়েছে। মারামারিও হয়েছে বলে শুনেছি। ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিচ্ছি।’’ তবে গোলমালের জেরে ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীদের ‘বাড়াবাড়ি’ বরদাস্ত করা হবে না। ক’দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও একই বার্তা দিয়েছেন। তার পরেও কেন ক্যাম্পাসে অশান্তিতে বারবার নাম জড়াচ্ছে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের? টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তের জবাব, ‘‘গন্ডগোল হচ্ছে ঠিকই। তবে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাঙ্গণে বিশৃঙ্খলা করলে টিএমসিপি-তে থাকা যাবে না।’’ জয়া জানান, গড়বেতা কলেজের ঘটনা জেনেই দু’পক্ষকে শো-কজ করা হয়েছে। সাত দিন পরে দু’পক্ষকে নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠকও ডেকেছেন তিনি।

Advertisement

টিএমসিপি-র গড়বেতা কলেজ ইউনিট সভাপতি কমলাকান্ত ঘোষের অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ রায়ের ঘনিষ্ঠদের। এখন কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। ফলে, ক্যাম্পাসে কোন গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। কলেজ সূত্রে খবর, গত এক সপ্তাহ ধরেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি চলছে। এ দিন সকালে তা একেবারে সংঘর্ষের আকার নেয়। লাঠি-ইট-পাথর নিয়ে মারামারি করে দু’পক্ষের ছেলেরা। গড়বেতা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।

ঘটনায় রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে অশান্তির জন্য দু’পক্ষই পরস্পরকে দুষছে। কমলাকান্তের অভিযোগ, “দেবরাজের ছেলেরা বিনা প্ররোচনায় ক্যাম্পাসে ঢুকে হঠাৎ হামলা চালায়।’’ দেবরাজের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কমলাকান্তের ছেলেরাই কলেজে ঢুকে গোলমাল বাধিয়েছে।’’

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই যে এ দিনের গোলমাল, তা প্রকারান্তরে মানছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ, রবিবার গড়বেতায় দলের সাংগঠনিক বৈঠক রয়েছে। কোন্দল রুখতে সেখানে কড়া বার্তা দেবেন জেলা নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন