প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর এ বার পুরসভাতেও বড়সড় ধাক্কা খাচ্ছে তৃণমূল। অন্তত দু’টি পুরসভা রাজ্যের শাসক দলের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা। ইতিমধ্যেই দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন কাঁচড়াপাড়া ও হালিশহর পুরসভার সিংহভাগ কাউন্সিলর। রয়েছেন আরও কয়েকটি পুরসভার কাউন্সিলররা। আজ মঙ্গলবারই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে বিজেপি সূত্রে দাবি। এছাড়া তৃণমূল এবং বাম মিলিয়ে আরও তিন থেকে চার জন বিধায়ক দলে যোগদান করছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের প্রশংসা এবং তার জেরে তৃণমূল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার পর থেকে বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল, তাঁর সঙ্গে আর কারা যাচ্ছেন। অবশেষে ছবিটা কিছুটা পরিষ্কার হল। সম্ভবত আজই দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন শুভ্রাংশু। ইতিমধ্যেই তিনি দিল্লিতে পৌঁছেও গিয়েছিলেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, শুভ্রাংশুর সঙ্গেই কাঁচড়াপাড়া পুরসভার ১৬ জন এবং হালিশহর পুরসভার ১৩ জন কাউন্সিলর দিল্লিতে রয়েছেন। তাঁদের বিজেপিতে যোগদান প্রায় নিশ্চিত। দলে রয়েছেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান অংশুমান রায় এবং কাঁচড়াপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান মাখন সিংহও। কাঁচড়াপাড়া পুরসভার মোট আসন ২৪ এবং হালিশহরের আসন সংখ্যা ২৩। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ায় দুই পুরসভাই হাতছাড়া হতে পারে তৃণমূলের। ক্ষমতা দখল করতে পারে বিজেপি। এর সঙ্গেই নৈহাটি ও কল্যাণী পুরসভার বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরও দলবদলের দলে রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই দিল্লিতে রয়েছেন বলেও সূত্রের খবর। যদিও এই দুই পুরসভার ছবিটা এখনও স্পষ্ট নয়।
রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, ৪০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই সেই জল্পনা জোরদার হচ্ছিল। ভোটের পর দলবদলের তালিকায় সম্ভবত প্রথম নাম লেখাচ্ছেন শুভ্রাংশু রায়। কিন্তু এখানেই যে শেষ নয়, সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়। তিনি জানিয়েছেন আজ মঙ্গলবারই ৩ থেকে ৪ জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। নাম স্পষ্ট করতে চাননি বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘‘গোটাটাই ইনকামিং প্রসেস, আরও অনেকেই আসবেন।’’
আরও পড়ুন: পদে ফিরতে নারাজ রাহুল, প্রিয়ঙ্কা-সহ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, বাড়ছে উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা
আরও পডু়ন: আদালতের বাইরে মিটমাটের চেষ্টায় রাজীব? সিবিআই এগোচ্ছে গ্রেফতারির লক্ষ্যেই
তবে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্যের নাম। ২০১৬ সালে তিনি বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। পরে তৃণমূলে সামিল হয়ে যান। ভাসছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের তৃণমূল বিধায়ক গৌতম দাস এবং হেমতাবাদের বাম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের নামও। গৌতম দাস তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ। ভোটের ফল ঘোষণার পর তৃণমূলের পর্যালোচনা বৈঠকে বিপ্লব মিত্রকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে অর্পিতা ঘোষকে দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই এই গোষ্ঠীতে ক্ষোভ বাড়ছিল। দেবেন্দ্রনাথ রায় অবশ্য আজই বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা অস্বীকার করেছেন। তবে একইসঙ্গে বিজেপির সঙ্গে আলোচনার রাস্তাও খোলা রয়েছে বলে জল্পনা পুরোপুরি উড়িয়েও দেননি।