বসিরহাটে হেরেও অখুশি নয় বিজেপি

২০১৪ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি ১,০৯,৬৫৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। নুসরতের জয়ের ব্যবধান ৩,৫০,৩৭০ ভোট।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০২:০৩
Share:

জয়ী: নুসরত জাহান। ছবি: নির্মল বসু

বিপুল ভোটে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান। তা সত্ত্বেও এলাকায় বিজেপির প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে তৃণমূল নেতৃত্বের কপালে ভাঁজ পড়েছে। বিশেষত, যে লোকসভা এলাকায় প্রায় ৪৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট, সেখানে বিজেপির ভোট বাড়ায় স্বভাবতই উদ্বেগ বেড়েছে তৃণমূল শিবিরের। দলের একাংশের মতে, সংখ্যালঘু ভোটের কিছুটা হলেও গিয়েছে বিজেপির ঘরে।

Advertisement

২০১৪ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি ১,০৯,৬৫৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। নুসরতের জয়ের ব্যবধান ৩,৫০,৩৭০ ভোট। তিনি পেয়েছেন ৭,৮২,০৭৯টি ভোট। যা মোট ভোটের ৫৬.১ শতাংশ। তবে গত লোকসভায় বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য পেয়েছিলেন ২,৩৩,৮৮৭টি ভোট (১৮.৫১ শতাংশ)। এ বার বিজেপির সায়ন্তনের প্রাপ্ত ভোট ৪,৩১,৭০৯। যা মোট ভোটের ২৭.৮ শতাংশ।

এটাই তৃণমূল নেতৃত্বের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘বসিরহাটের ৭টি বিধানসভার সব ক’টিতেই নুসরত এগিয়ে। যে ভাবে কংগ্রেস এবং সিপিআইয়ের ভোট উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে, তা বেশি উদ্বেগের।’’ ওই নেতার কথায়, ‘‘বসিরহাটে দলীয় প্রার্থী বেশি ভোট পেলে কী হবে, বিরোধী দু’টি দল ভেঙে বিজেপির শক্তি বাড়ায় এই মুহূর্তে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের ধরে রাখা বেশ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

Advertisement

তৃণমূলের বসিরহাট লোকসভার আহ্বায়ক ফিরোজ কামাল গাজি বলেন, ‘‘এটা যেমন ঠিক, কংগ্রেস-বামের ভোটের বড় অংশ বিজেপিতে গিয়েছে, তেমনই এটাও ঠিক, উন্নয়নের শরিক হতে ধর্মমত নির্বিশেষে একটা বড় অংশের মানুষ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।’’ চিন্তিত কংগ্রেস নেতা হিরন্ময় দাসও।

তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যে কেন শেষ মুহূর্তে মত পরিবর্তন করে বড় অংশ বিজেপি এবং বাকি অংশ তৃণমূলের দিকে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।’’ অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘ভয় দেখিয়ে বাড়িতে আটকে রাখা, টাকার প্রলোভন এবং হুমকি-সহ নানা ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করায় আমাদের পরাজয় হয়েছে। তবে সায়ন্তনের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোবল এক লাফে কয়েক গুণ বাড়ল।’’ তাঁর দাবি, মোদীর উপরে আস্থা রেখে সংখ্যালঘুদের একটা অংশ তাঁদের ভোট দিয়েছেন। সিপিএমের জেলা নেতা শ্রীদীপ রায়চৌধুরী মনে করেন, ‘সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের’ ভোট হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের সামনে ভরসা দেওয়ার মতো শক্তি বর্তমানে আমাদের না থাকায় বাম সমর্থকেরা নিজের মতো করে আশ্রয় খুঁজেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন