জলসরায় রাস্তার ধস দেখতে ভিড় । ছবি: কৌশিক সাঁতরা
ঘাটাল থেকে চন্দ্রকোনা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাজ্য সড়কের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছিল গত বছরের শেষে। নববর্ষের দিনে সেই রাস্তাতেই দেখা গেল বিপত্তি। বসে গেল রাস্তার একটি অংশ। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাল থানার জলসরার জোড়াপুকুরের পাশে। ওই জায়গায় রাস্তার অর্ধেক অংশই বসে গিয়েছে।
ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। তিন বছর পরে গত বছরের শেষে কাজ শেষ হয়েছিল। পূর্ত দফতর জানায়, রাস্তার সম্প্রসারণে খরচ হয় প্রায় ১৬০ কোটি টাকা। সম্প্রসারণের পরে সেটি ৪ ফুট উঁচু ও ১১০ মিলিমিটার পুরু হয়েছে। চলতি বছরের গোড়া পর্যন্ত ওই রাস্তার পাশে বিভিন্ন সতর্কীকরণ বোর্ড টাঙানোর কাজ হয়। এরই মধ্যে মূল সড়কে এমন বিপত্তিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কেউ কেউ বলছেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের জন্যই এই অবস্থা।
চালুর কয়েকদিনের মধ্যেই শুকনো আবহাওয়াতেও রাস্তা বসে গেল কেন? পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের ব্যাখ্যা, রাস্তাটির দু’পাশে জলাশয় থাকার জন্য জলের চাপ দু’দিকে সমান ছিল। হঠাৎ করে একটি জলাশয়ের জল শুকিয়ে যায়। এর ফলে শূন্যতা তৈরি হয় ও মাটির তলা ফেঁপে যায়। সেই কারণেই রাস্তাটি বসে বিপত্তি ঘটে। পূর্ত দফতরের নিবার্হী বাস্তুকার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্বাচনী আচরণবিধি চলার জন্য এখন ওই অংশের সাময়িক সংস্কার করে দেওয়া হবে। ভোট মিটলে হবে পুরোপুরি সংস্কার। আপাতত ওই জায়গা দিয়ে অতিরিক্ত মালবোঝাই গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, অনেক রাস্তার পাশেই বড় জলাশয় থাকে। সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পুকুরে ভাল করে গার্ডওয়াল দিতে হয়। এক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। শুধু তাই নয়, পুরনো গার্ডওয়ালের সংস্কারও করেনি পূর্ত দফতর। শুকিয়ে যাওয়া জলাশয় থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ চলছে। ছিল না কোনও নজরদারি।
বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “রাস্তার মানের সঙ্গে আপোষ করা হয়েছে বলেই রাস্তা ধসে গিয়েছে। এমনিতেই তো বরাদ্দ টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা হয়ে যায়। তাতে কীই বা কাজ হবে!” তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝির পাল্টা, “রাস্তা নিয়ে রাজনীতি করে লাভ নেই। তৃণমূলের আমলে রাস্তার হাল ফিরেছে।’’ তাহলে সদ্য সম্প্রসারিত রাস্তায় ধস নামল কেন? তাঁর দাবি, ‘‘সেটা পূর্ত দফতরই বলতে পারবে।’’