পাহাড়ে কি ভিন্‌দেশি

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে বিস্ফোরণের পরে খোদ গুরুঙ্গের বিরুদ্ধেই ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তারই মধ্যে সহযোগী দলগুলির মধ্যে থেকেই বহিরাগত প্রসঙ্গ উঠে আসায় মোর্চার কর্মী-নেতারা উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বেগ যে কতটা, তার প্রমাণ মিলেছে এ দিনই। দুপুরে চকবাজারে বক্তৃতা করার সময়ে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ত্রিলোক রোকাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে তিনি পালিয়ে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৫১
Share:

ছবি: সংগৃহীত

পাহাড়ে বিদেশি শক্তি ঢুকে পড়ছে বলে এ বার দাবি করল জিএনএলএফ। মোর্চা রবিবার এ নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে বিমল গুরুঙ্গরা বারবারই দাবি করেছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই করছেন। তবে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, স্থানীয় মদত ছাড়া বহিরাগত শক্তি মাথা চাড়া দিতে পারে না। পাহাড়ের কোনও রাজনৈতিক শক্তিই তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।

Advertisement

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে বিস্ফোরণের পরে খোদ গুরুঙ্গের বিরুদ্ধেই ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তারই মধ্যে সহযোগী দলগুলির মধ্যে থেকেই বহিরাগত প্রসঙ্গ উঠে আসায় মোর্চার কর্মী-নেতারা উদ্বিগ্ন। সেই উদ্বেগ যে কতটা, তার প্রমাণ মিলেছে এ দিনই। দুপুরে চকবাজারে বক্তৃতা করার সময়ে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ত্রিলোক রোকাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। পথসভা শুরু হতেই পুলিশ চারদিক ঘিরে ফেলে। পুলিশকে এগিয়ে আসতে দেখে বক্তৃতা মাঝপথে থামিয়েই পিছন দিকে হাঁটা দেন রোকা। তাঁকে ধরতে দৌড়তে শুরু করে পুলিশ। ভয়ে পালাতে থাকেন অন্য কর্মী-সমর্থকেরাও। সভাস্থল থেকে ৩৬ জনকে নিয়ে দার্জিলিং থানায় বসিয়ে রেখেছে পুলিশ। মোর্চারই এক কর্মীর কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেও একজন গ্রেফতার হলে দলের নেতারা থানা ঘেরাও করার নির্দেশ দিতেন। আজকে ৩৬ জনকে থানায় নিয়ে গেল। কিন্তু নেতাদের দেখা নেই।’’

গ্রেফতারের ভয়েই মোর্চার নেতারা গা ঢাকা দিচ্ছেন বলে অনুমান কর্মীদের। খোদ গুরুঙ্গকেই যখন ইউএপিএ দেওয়া হয়েছে, তখন তাঁদেরও একই ধারায় ফেলে দেওয়া হতে পারে বলে নেতাদের আশঙ্কা। এ দিনই সন্ধ্যায় কার্শিয়াং থেকে মোর্চা নেতা তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর নীরজ প্রধান ধরা পড়েন।

Advertisement

আরও পড়ুন: মেয়েটির সারা শরীর ভেসে যাচ্ছিল রক্তে

আন্দোলনে জঙ্গি যোগ

নতুন নয় পুলিশের দাবি

• আশির দশকে উত্তাল পাহাড়ে নেপালের কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগ ছিল বলে অভিযোগ। • নেপাল থেকেই অস্ত্র সরবরাহের হদিস পেয়েছিল পুলিশ। • অসমের আলফা গোষ্ঠীর পরোক্ষ মদত ছিল বলে অভিযোগ। • এখন উত্তরপূর্বের তিনটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় বলে দাবি। • অরুণাচল প্রদেশের এনএলসিটি এবং অসমের এনডিএফবি-র যোগের অভিযোগ রয়েছে। • জঙ্গলমহল থেকে মাওবাদীরাও ঘাঁটি গেড়েছে বলে অভিযোগ।

জিএনএলএফের বক্তব্যেও চাপ বাড়ছে মোর্চার। শিলিগুড়িতে জিএনএলএফের সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘‘যে বিস্ফোরক ব্যবহার হচ্ছে বলে শুনেছি, তা সাঙ্ঘাতিক। বাইরের শক্তি ঢুকে পড়েছে বলে শুনেছি। কোনও শর্ত ছাড়াই রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা উচিত।’’ জিএনএলএফের অন্য এক নেতার দাবি, ‘‘পাহাড়ে হাওয়াই চটি পরা লোকেদের ঘুরঘুর করতে দেখা যাচ্ছে। এরা কারা?’’

পাহাড়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে এ দিন আবেদন জানায় গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন সমন্বয় কমিটি (জিএমসিসি)। রবিবার বিকেলে কালিম্পঙের এক হোটেলে জিএমসিসি-র বৈঠক হয়। তবে আলাদা করে কোনও চিঠি রাজ্য ও কেন্দ্রকে দেওয়ার কথা কমিটির নেতারা জানাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন