খাদ্যসাথী বা কন্যাশ্রীর মতো সাফল্য মিলেছে গতিধারা প্রকল্পেও। নবান্ন মনে করে, সেই সাফল্যের প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সেও। এ বার গতিধারার সাফল্যকে আরও ছড়িয়ে দিতে সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদ সদস্য, পুরসভার মেয়র, চেয়ারম্যানদের ‘কোটা’ চালু করল সরকার। শুক্রবার বিধানসভায় শাসক দলের বিধায়কদের কাছে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং ফর্মও বিলি করা হয়েছে।
২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবাসন-সহ সব ক্ষেত্রে কোটা তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রশাসনের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কেন গতিধারায় কোটা-ব্যবস্থা চালু করা হল? পরিবহণ দফতরের কর্তাদের ব্যাখ্যা, গোটা রাজ্যে গতিধারা চালু থাকলেও মূলত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বেকার যুবক-যুবতীরাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন। এ বার কোটা-ব্যবস্থা চালু করে গ্রামেগঞ্জে এই প্রকল্পকে ছড়িয়ে দিতে চায় সরকার।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সাংসদ এবং বিধায়কেরা ২০ জন করে বেকার যুবক বা যুবতীকে গতিধারা প্রকল্পের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন। সুপারিশ করতে হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। জেলা সভাধিপতি, জেলা পরিষদ সদস্য, পুরসভার মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের জন্য বরাদ্দ ১০টি কোটা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের জন্য ৫টি। শাসক দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এখন তো পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা, বিধায়ক— সর্বত্রই আমাদের প্রতিনিধি। তাঁদের হাত থেকে গতিধারার টাকা পেলে ভোটে তার ফল মিলবে বই কি।’’
দফতর সূত্রের খবর, ২০১৫-১৬ আর্থিক বছর থেকেই গতিধারা প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ শুরু করেছে সরকার। এই তিন বছরেই সরকার যা বরাদ্দ করেছে, প্রতি বছরই তা পুরোপুরি খরচ করে ফেলেছে পরিবহণ দফতর। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে গতিধারায় বরাদ্দ হয়েছিল ৫২ কোটি টাকা। উপকৃত হয়েছিলেন ৫২০০ যুবক-যুবতী। তার পরের আর্থিক বছরে বরাদ্দ হয়েছিল ৭৫ কোটি। ভর্তুকি পেয়েছেন ৭৫০০ যুবক-যুবতী। স্বভাবতই এই সাফল্যে উৎসাহিত নবান্ন ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের জন্য বরাদ্দ করেছে ৯৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, কোটা ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা শেষ হয়ে যাবে।
এ নিয়ে অবশ্য সম্পূর্ণ অন্ধকারে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ,‘‘আরও একটি স্বজনপোষণের ব্যবস্থা হল।’’