পর্যটক টানতে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার গড়ে উঠছে জুনপুটে

এ বার জুনপুটের কাছে সমুদ্রতীরে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য দফতর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপরিষদ।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ২৩:১৪
Share:

সমুদ্রের ধার বরাবর মেরিন ড্রাইভ ধরে পৌঁছে যাওয়া যাবে জুনপুটে। —নিজস্ব চিত্র।

সৈকত শহর দিঘা থেকে শঙ্করপুরের মৎস্য বন্দর হয়ে জুনপুট পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সমুদ্রতীর সংলগ্ন এলাকা দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণ চলছে দ্রুত। এ বার জুনপুটের কাছে সমুদ্রতীরে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য দফতর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপরিষদ।

Advertisement

কাঁথি-১ ব্লকের জুনপুট এলাকায় মৎস্য বন্দরের কাছে রয়েছে ‘গভর্নমেন্ট ফিশ টেকনোলজিক্যাল স্টেশন’ বা মৎস্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চত্বরে প্রায় ৪১ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৪৬টি জলাশয় রয়েছে। ওই সব জলাশয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ করা হয়ে থাকে মৎস্য দফতরের উদ্যোগে। রয়েছে ঝাউবাগান, অতিথিশালা ও আবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। শনিবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই জেলা সভাধিপতি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও জেলা মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে জুনপুটকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চত্বরে থাকা জলাশয়গুলিকে ব্যবহার করে বোটিংয়ের ব্যবস্থা ও চিলড্রেন পার্ক গড়ে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার গড়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।

জেলা মৎস্য দফতরের আধিকারিক সৌরীন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘জুনপুট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চত্বরে জলাশয়গুলিকে ব্যবহার করেই পর্যটকদের জন্য ‘ইকো ট্যুরিজম সেন্টার’ গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। ওই জলাশয়ে বোটিংয়ের ব্যবস্থা ও পাশেই চিলড্রেন পার্ক গড়া হবে। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এই পরিকাঠামো তৈরির জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এলাকার স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যদের সাহায্যে ইকো ট্যুরিজম সেন্টার চালানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হবে।’’

Advertisement

মৎস্য দফতর ও জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, দিঘা সহ সমুদ্রতীরবর্তী শঙ্করপুর, মন্দারমণি, তাজপুর, জুনপুট হয়ে খেজুরি পর্যন্ত সমুদ্রতীর বরাবর সড়ক নির্মাণ করে মুম্বইয়ের ধাঁচেই ‘মেরিন ড্রাইভ’ তৈরির প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই প্রকল্প রূপায়ণে সমুদ্রতীর বরাবর পাকা সড়ক নির্মাণ চলছে। এজন্যই সমুদ্র তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। দিঘা থেকে সমুদ্রতীর বরাবর সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হলে জুনপুট মৎস্য বন্দরের পর্যটন গুরুত্ব আরও বাড়বে। পর্যটকরা দিঘা থেকে সমুদ্রতীর বরাবর প্রায়২৫ কিলোমিটার দূরে জুনপুট পর্যটন কেন্দ্রেও আসতে পারবেন মেরিন ড্রাইভ ধরে। এ ছাড়া কাঁথি শহর থেকে সড়কপথেও মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে জুনপুটে আসতে পারবেন। তাই পর্যটক আসার সুযোগকে কাজ লাগাতে জুনপুট মৎস্য বন্দর ও ফিস টেকনোলজিক্যাল স্টেশন চত্বরে থাকা জলাশয় ঘিরে ইকো ট্যুরিজম গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য দফতর ও জেলা পরিষদ।

জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘জুনপুটে মৎস্য বন্দর ছাড়াও মৎস্য দফতরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্য ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়া এবং গবেষকরা আসেন। মেরিন ড্রাইভের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পর্যটকদের কাছে জুনপুটকে আকর্ষণীয় করতে ইকো ট্যুরিজম গড়ারও পরিকল্পনা হয়েছে। এতে বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন