CV Ananda Bose

বিরোধের আবহের মধ্যে আচমকাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল, জানা ছিল না পুলিশেরও

সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ আচমকাই কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রাজ্যপালের কনভয়। সেখানে পৌঁছে রাজ্যপাল উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৩৫
Share:

হঠাৎই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফাইল চিত্র।

সোমবার সকালে হঠাৎই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই যে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন, সে খবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এমনকি পুলিশের কাছেও ছিল না বলে জানা গিয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সকাল ১১টা নাগাদ আচমকাই কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রাজ্যপালের কনভয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে রাজ্যপাল উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, প্রাথমিক ভাবে তা জানা যায়নি। রাজভবনের তরফেও এই বিষয়ে মুখ খোলা হয়নি।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় পরে এই প্রসঙ্গে জানান, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন। অন্য কাজ মিটিয়ে তিনি আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। সোমবারই জাতীয় শিক্ষানীতির প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা উপাচার্যের। আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো না হলেও, সূত্রের খবর এই বৈঠকের শেষে উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্যপাল বোস। পদাধিকারবলে রাজ্যপাল রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। তাই আচার্য হিসাবে তিনি যদি এই বৈঠকের শেষে উপস্থিত থাকেন, তবে তা তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যপাল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, তখনও উপাচার্য এসে পৌঁছননি। রাজ্যপাল প্রায় ৭ মিনিট অপেক্ষা করার পর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছন।

Advertisement

রাজভবনের তরফে প্রকাশিত একটি নির্দেশিকাকে ঘিরে সম্প্রতি ‘দূরত্ব’ বেড়েছে রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয় রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক কাজের রিপোর্ট রাজভবনে আচার্যের কাছে পাঠাতে হবে। রাজ্যপাল বোসের আগাম অনুমোদন নিতে হবে আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের কাছে রাজভবন থেকে এই মর্মে নির্দেশ পৌঁছেও গিয়েছে। তার পরই এই নির্দেশিকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘ওই চিঠির বৈধতা আছে কি না তা দেখতে হবে। আমি উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিবকে আইনি পরামর্শ নিতে বলেছি।’’ একই সঙ্গে ওই চিঠি যেন রাজভবন প্রত্যাহার করে নেয় সেই বার্তাও দেন শিক্ষামন্ত্রী।

ওই নির্দেশ সম্পর্কে ব্রাত্য জানান, উচ্চশিক্ষা দফতরকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে এই চিঠি উপাচার্যদের পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে এমন ভাবে চিঠি পাঠানো যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বর্তমান রাজ্যপালকে নিয়ে প্রথম দিকে খুশিই ছিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। তখন বিজেপির অভিযোগ ছিল, রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন। রাজভবনের প্রধান সচিব পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত শুরু হয়। রাজভবনের তরফে অস্থায়ী উপাচার্যদের পাঠানো নির্দেশিকাকে ঘিরে সেই সংঘাত আরও বাড়ে। এই আবহে রাজ্যপালের কাউকে না জানিয়েই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাওয়া ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন