C V Ananda Bose

হাতেখড়ি সেরেই দিল্লি গেলেন আনন্দ, শাহের তলবেই কি রাজধানী যাত্রা বাংলার ‘ছাত্র’ রাজ্যপালের

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডাকে তাঁর এই দিল্লি যাত্রা। তাঁর হাতেখড়ি অনুষ্ঠান নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরেই এই সফর বলে দাবি বিজেপি শিবিরের অনেকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:২১
Share:

হাতেখড়ি সেরেই দিল্লি চললেন আনন্দ, শাহের তলবেই কি রাজধানী যাত্রা বাংলার ছাত্র রাজ্যপালের। —ফাইল ছবি।

‘হাতেখড়ি’ পর্ব শুরু হয়েছিল বিকেল ৫টায়। সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কিছু পরেই, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ জানা গেল বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডাকে তাঁর এই দিল্লি যাত্রা। তাঁর হাতেখড়ি অনুষ্ঠান নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরেই এই সফর বলে দাবি বিজেপি শিবিরের অনেকের। তবে কেউ কেউ বলছেন, আনন্দের এই দিল্লি সফর পূর্ব নির্ধারিত।

Advertisement

রাজভবনে রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমন্ত্রণ পেলেও যে না-ও যেতে পারেন, তা আগেই লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান শুরুর আগে শুভেন্দু টুইট করে তিনি যাচ্ছেন না, এবং কেন যাচ্ছেন না তার ব্যাখ্যা দেন। জানান, তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপালের ‘ভালমানুষি’কে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে রাজ্য সরকার। নবান্নের ‘দূত’ হিসাবে ‘কাজ’ করছেন রাজ্যপালের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নন্দিনী চক্রবর্তী। এ ছাড়াও টাকার বিনিময়ে যখন চাকরি দেওয়ার কথা উঠে আসছে, তখন রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’র অনুষ্ঠান দেখিয়ে ওই সব ইস্যু চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সন্ধ্যায় রাজ্যপাল যে দিল্লি যাচ্ছেন সে ব্যাপারে তিনি ওয়াকিবহাল বলেও জানান শুভেন্দু। কলকাতায় অন্য একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শুভেন্দু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘জানি উনি রাতেই দিল্লি যাচ্ছেন। শুক্রবার রাজধানীতে ওঁর সঙ্গে অনেক বিশিষ্ট মানুষের দেখা ও কথা হবে।’’

শুভেন্দুর পাশাপাশি রাজ্যপালের আমন্ত্রণ পেলেও যাননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার বালুরঘাটে নিজের বাড়িতেই ছিলেন সুকান্ত। এ বারের সরস্বতী পুজোয় তাঁর কনিষ্ঠা কন্যার হাতেখড়ি ছিল। তাই তিনি যে রাজভবনে যেতে পারবেন না, তা আগেই জানিয়েছিলেন আনন্দকে। সুকান্তের কন্যার ‘হাতেখড়ি’তে উপহারও পাঠান বাংলার রাজ্যপাল।

Advertisement

সুকান্ত কোনও রাজনৈতিক কারণ না দেখালেও শুভেন্দু স্পষ্ট ভাবেই রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি এমনটাও জানান যে, জগদীপ ধনখড়ের পরে এমন এক জনকে রাজ্যপাল হিসাবে পেয়ে তিনি বেশ ‘হতাশ’। এ সব নিয়ে বিতর্কের মধ্যে রাজ্যপালের দিল্লি যাত্রা। তাতে নতুন রাজনৈতিক মাত্রা তৈরি হল। সরকারি ভাবে এখনও জানা যায়নি, তিনি কেন যাচ্ছেন বা কার সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন। ‘বিশিষ্ট মানুষদের সঙ্গে দেখা হবে’ বলে শুভেন্দু যে মন্তব্য করেছেন তার মধ্যে অবশ্য অনেকে অন্য ইঙ্গিত দেখছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেই এই তলব বলেই মনে করা হচ্ছে।

অন্য দিকে, রাজ্যপালকে নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই তৈরি করতে শুভেন্দুর পাল্টা টুইট করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যপালের দিল্লি সফর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কুণাল লিখেছেন, ‘‘রাজ্যপালের দিল্লি সফর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। তা গোপন করে যাঁরা অন্য গল্প দিচ্ছেন এবং তলবজনিত চিত্রনাট্য লিখছেন, সেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজভবনের উপর চাপের অপচেষ্টা বিজেপি চালাচ্ছে সেটা ঠিক। কিন্তু রাজ্যপালকে তলবের গল্প রটিয়ে দিল্লির দাদাগিরি প্রতিষ্ঠা যেন না করা হয়।’’

রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’র অনুষ্ঠানে না যাওয়া নিয়েও শুভেন্দুকে ‘অসভ্য’, ‘ঈর্ষাপরায়ণ’, ‘নীচ মন’ বলে আক্রমণও করেছেন কুণাল। তিনি লিখেছেন, ‘‘ধনখড়ের সময় বিজেপি রাজনৈতিক কাজের অফিস বানিয়েছিল রাজভবনকে, তখন সম্মানের কথা মনে পড়েনি? রাজ্যপাল বাংলা শিখতে চেয়েছেন। বঙ্গবাসী ও বঙ্গভাষীর তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো উচিত। সকলে জানাচ্ছেনও। একমাত্র বঙ্গের বিশ্বাসঘাতকরাই এ নিয়ে রাজনীতি করতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন