শীঘ্রই জিটিএ-রাজ্য বৈঠক, জানালেন মমতা

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গঠনের ঠিক ৩ বছরের মাথায় দফতর হস্তান্তর সহ নানা বিষয় পর্যালোচনা করতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার দুপুরে দার্জিলিঙে জিটিএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রেজা প্রধান

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩২
Share:

গুরুঙ্গের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরোচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় (তখনও সুস্থ), গৌতম দেবও।

Advertisement

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গঠনের ঠিক ৩ বছরের মাথায় দফতর হস্তান্তর সহ নানা বিষয় পর্যালোচনা করতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার দুপুরে দার্জিলিঙে জিটিএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জিটিএ প্রধান বিমল গুরুঙ্গের সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়। সেই বৈঠককে গুরুঙ্গ ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বললেও মোর্চা সূত্রের খবর, সেখানেই পর্যায়ক্রমে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসে জিটিএ-র নানা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।

দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক মাসের মধ্যে জিটিএ ও রাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। তার পরেই কেন্দ্র-রাজ্য ও জিটিএ মিলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে।” মোর্চা নেতারাও এই সিদ্ধান্তে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। গুরুঙ্গের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভাল কথা হয়েছে। পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়নে আরও গতি আনার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”

Advertisement

মোর্চা নেতারা দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি দফতর হস্তান্তর নিয়ে জটিলতার অবসান চেয়ে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চাইছিলেন। জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের ৫৯টি দফতর এবং সংস্থা পরিচালনার দায়িত্ব জিটিএ-র হাতে দেওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত ৩৪টি দফতর হস্তান্তরিত হয়েছে বলে জিটিএ-র তরফে দাবি করা হয়েছে। বিশেষত বন, ভূমি, চা বাগানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হস্তান্তরের প্রক্রিয়া পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়নি। সেই সঙ্গে জিটিএ নানা ক্ষেত্র থেকে কর আদায় করার ক্ষমতাও পায়নি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে বন, পরিবেশ, চা বাগান হস্তান্তর ও কর বসানো সংক্রান্ত ক্ষমতা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের সম্মতি দরকার। তার আগে রাজ্যের পক্ষে ওই সব ব্যাপারে যা করণীয়, তা সবটা হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। সে জন্য প্রথমে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার রূপরেখা তৈরি করতে চাইছে জিটিএ ও রাজ্য সরকার। তা ছাড়াও, জিটিএ ও রাজ্য মিলে পাহাড়ের জন্য কেন্দ্রের থেকে বাড়তি বরাদ্দ আদায়ের জন্য একটি প্রস্তাব তৈরির কথা ভাবছে।

যেমন, ভূমিকম্প এবং ধসের ক্ষতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে যে হারে সাহায্য করার কথা বলেছে, জিটিএ এলাকায় তার তুলনায় কম বরাদ্দ করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রকে চাপ দেব।” তিনি জানান, একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পাহাড়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ নিয়েও কমিটি হবে।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে বেরিয়ে আসছেন জিটিএ
চিফ বিমল গুরুঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলে।

এ দিন দার্জিলিঙের জেলাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক বৈঠকে কার্শিয়াং, কালিম্পং এবং দার্জিলিঙের তিন মোর্চা বিধায়ক এবং তিন পুরসভার চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে কালিম্পঙের মোর্চা বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী জানান, আশা করছি এ দিনের বৈঠকের পরে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় জিটিএ সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারবে। দু’পক্ষের সম্পর্কও দৃঢ় হবে। তিনি বলেন, “রাজনীতিতে অনেক কিছুই হয়। আশা করব, দার্জিলিঙের জন্য সব ভালই হবে।”

ছবি: রবিন রাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন