উঠোনে নাকি বাঘ, ভয় এ বার ধেড়ুয়ায়

লালগড়ের জঙ্গল ছেড়ে এখন তার আস্তানা নাকি মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া। রবিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বাড়ির উঠোনে সাক্ষাৎ বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করছেন। এলাকায় বাঘ জাতীয় হিংস্র প্রাণীর পায়ের ছাপ মিলেছে বলে জানিয়েছে বন দফতরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধেড়ুয়া ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪০
Share:

সন্ধান: ধেড়ুয়ায় এই পায়ের ছাপ বাঘের বলেই অনুমান বন দফতরের। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

ঠাঁই বদলেছে বাঘবাবাজি। লালগড়ের জঙ্গল ছেড়ে এখন তার আস্তানা নাকি মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া। রবিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বাড়ির উঠোনে সাক্ষাৎ বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করছেন। এলাকায় বাঘ জাতীয় হিংস্র প্রাণীর পায়ের ছাপ মিলেছে বলে জানিয়েছে বন দফতরও।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের ধেড়ুয়ার শিয়ারবনিতে বাড়ি বছর চল্লিশের লক্ষ্মী মাহাতোর। রবিবার সন্ধ্যায় ঘরের সামনে বাঁধা গরু-ছাগলের দড়ি খুলতে এসে হঠাৎই চিৎকার জোড়েন তিনি, ‘বাঘ বাঘ’। লক্ষ্মীর চিত্কারে টর্চ হাতে বাইরে বেরোন পাশের বাড়ির বৃদ্ধ বন্দিরাম মাহাতো। তাঁরও দাবি, বাঘ দেখেছেন। সোমবার লক্ষ্মী বলছিলেন, “একেবারে উঠোনের সামনে বাঘটা দাঁড়িয়েছিল। ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। হাতি অনেকবার দেখেছি। কিন্তু বাঘ তো এই প্রথম।” ষাট পেরনো বন্দিরামের কথায়, “টর্চের আলো ফেলতেই দেখি সামনে বাঘ! মুহূর্তে জঙ্গলে চলে গেল।”

আরও পড়ুন: শেষবেলায় জটিলতা মেঘালয়-নাগাল্যান্ডে

Advertisement

ধেড়ুয়ার এই এলাকায় বড় বড় পায়ের ছাপও দেখা গিয়েছে। সোমবার সকালে তা খতিয়ে দেখতে আসেন বনকর্মীরা। পরে ডিএফও (মেদিনীপুর) রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “ধেড়ুয়ার শিয়ারবনিতে কিছু পায়ের ছাপ মিলেছে। ছাপগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাঘ ওখানে আসতেও পারে।” গত শুক্রবার লালগড়ের মেলখেরিয়া-মধুপুর জঙ্গল এলাকায় বন দফতরের বসানো ক্যামেরায় বাঘের ছবি দেখা যায়। ওই এলাকা থেকে ধেড়ুয়ার দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। তবে বাঘ যদি জঙ্গলপথে এখানে এসে থাকে, তবে বড়জোর ১৮ কিলোমিটার পথ এসেছে বলে বনকর্তাদের একাংশ জানান।

লালগড়ের জঙ্গলে দাঁতালের দাপাদাপি শুরু হওয়ায় বাঘের ঠাঁই বদল অস্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছে বন দফতর। তাই ধেড়ুয়ার জঙ্গলে ক্যামেরা বসানো, প্রয়োজনে ফাঁদ-খাঁচা পাতার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি বাসিন্দাদের সাবধান করতে ধেড়ুয়াতেও প্রচার শুরু করেছে বন দফতর।

বাঘের খোঁজে হইচই বাধায় ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (এনটিসিএ) যারপরনাই বিরক্ত। বাঘ সংরক্ষণে দেশের সর্বোচ্চ এই সংস্থার প্রশ্ন, লালগড়ে বাঘের ক্যামেরা-বন্দি ছবি বন দফতর কেন প্রকাশ্যে আনল। কারণ, ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই লালগড়ের জঙ্গলে ভিড়। বনাঞ্চলে অজস্র গাড়ি ও সংবাদমাধ্যমের ঘন ঘন আনাগোনা নিয়েও আপত্তি তুলেছে এনটিসিএ। এ ব্যাপারে রাজ্য বন দফতরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ দিল্লির ওই সংস্থার কর্তারা। বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, বাঘ ধরা পড়লে তার ঠিকানা হবে ঝড়খালির ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র। বনের বাঘকে নিজস্ব পরিবেশে না রেখে বন্দি করার প্রস্তাবেও আপত্তি তুলেছে এনটিসিএ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন