স্বাস্থ্যকর্তাকে মারধর,কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা

তাঁর ব্লকে ৯৯ শতাংশ প্রসব বাড়ির বদলে হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে হওয়ায় মাত্র মাস দেড়েক আগে তাঁকে পুরস্কার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভগবানগোলার সেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে (বিএমওএইচ) বেধড়ক মারধর করলেন তাঁরই দলের নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

অনল আবেদিন

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

কান্না: মারের পরে মতিয়ার হক। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর ব্লকে ৯৯ শতাংশ প্রসব বাড়ির বদলে হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে হওয়ায় মাত্র মাস দেড়েক আগে তাঁকে পুরস্কার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভগবানগোলার সেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে (বিএমওএইচ) বেধড়ক মারধর করলেন তাঁরই দলের নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

প্রহৃত চিকিৎসকের নাম মতিয়ার হক। শনিবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে মেঝেয় ফেলে এলোপাথাড়ি কিল-চড়-লাথি মারে বলে অভিযোগ। তাঁকে স্থানীয় কানাপুকুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, ‘‘উনি গুরুতর আহত। রাতেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’’ রাত পর্যন্ত পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে।

গোটা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ব্লক তৃণমূল সভাপতি মতিয়ার হোসেন প্রামাণিক। তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছাকাছি গড়ে ওঠা একটি নার্সিংহোমের লোকজন। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভাল কাজ করতে থাকায় নার্সিংহোমটির ব্যবসা তেমন জমছে না বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। দুপুর ৩টে নাগাদ এ রকম কিছু লোককে নিয়ে বিএমওএইচের ঘরে আসেন তৃণমূল নেতা। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, বহির্বিভাগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক বসেন কেন? বিএমওএইচ জানান, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশেই তিনি রোগী দেখেন। প্রহৃত চিকিৎসকের অভিযোগ, ‘‘এ কথা শুনেই মতিয়ার হোসেন প্রামাণিকের সঙ্গে আসা ৭-৮ জন আমায় চেয়ার থেকে মেঝেয় ফেলে কিল, চড়, লাথি মারে।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রেক খবর, আক্রমণকারীদের মধ্যে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য কিসমত শেখও ছিলেন। মতিয়ার হোসেন অবশ্য দাবি করেন, ‘‘কয়েক জন বহিরাগত ঢুকে পড়ে বিএমওএইচ-কে মারধর করেছে। আমিই তো তাঁকে বাঁচিয়েছি। আমার নামেই বদনাম!’’

Advertisement

বিএমওএইচ পুলিশের কাছে যে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন, তাতে আক্রমণকারী মতিয়ার হোসেন প্রামাণিক ও কিসমত শেখ-সহ তৃণমূলের মোট ৬ জনের নাম রয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অংশুমান সাহা বলেন, ‘‘এক জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ তৃণমূলের লালবাগ মহকুমা সভাপতি রাজীব হোসেন বলেন, ‘‘দলের পতাকা হাতে নিয়ে কেউ গুন্ডামি করলে বরদাস্ত করা হবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে বলা হবে। দলীয় স্তরেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement