State News

চাপানউতোর বহাল, মন্ত্রী-মেয়রে তপ্ত বাগ্‌যুদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়ায়

লকডাউনের মাঝেই রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গেল আসানসোলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ২২:১৮
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

করোনা সঙ্কটের মাঝে কে সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছেন, কে নেই, তা নিয়ে বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল শিল্পাঞ্চল তথা খনি অঞ্চলে। মেয়র তথা বিধায়কের কটাক্ষ ছুড়লেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। দ্রুত পাল্টা কটাক্ষ নিয়ে ফিরে এলেন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। ফলে লকডাউনের মাঝেই রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গেল আসানসোলে।

Advertisement

রাজনৈতিক ভাবে কতটা উত্তপ্ত আসানসোল, যে কোনও নির্বাচনেই তার ছবি ফুটে ওঠে। নির্বাচন না থাকলেও দুই প্রধান প্রতিপক্ষের মধ্যে প্রায় সারা বছর তিক্ত আদান-প্রদান চলতে থাকে পশ্চিম বর্ধমানের ওই খনি তথা শিল্পাঞ্চলে। লকডাউনেও সেই ছবির ব্যতিক্রম নেই। আসানসোলের মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করলেন এলাকার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একাধিক টুইট করে জিতেন্দ্রকে বিঁধলেন বাবুল।

এই সঙ্কটের সময়ে আসানসোলে কেন নেই বাবুল, এ দিনের নিজের টুইটে সেই প্রশ্ন তুলেই কটাক্ষ ছোড়েন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি লেখেন, ‘‘লকডাউনে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা বোধ হয় আমাদের সাংসদ তথা মন্ত্রীরই হয়েছে।’’ এতেই থামেননি আসানসোলের মেয়র। তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘২ লক্ষ ভোটে জেতার অহঙ্কার? ভগবান ওঁকে ক্ষমা করুন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ৩ চিকিৎসক আক্রান্ত করোনায়

জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই টুইট করার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই প্রত্যুত্তর দেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি লেখেন, ‘‘স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার হতে পারে, কিন্তু মন পরিষ্কার হয় না। তাই মেয়র সাহেবকে দোষ দেব না। কিন্তু একটা পরামর্শ অবশ্যই দেব: আপনি মেয়র, তবু টুইটার আইডি ‘জিতেন্দ্রটিএমসি’ কেন? টিএমসি সরান আর মেয়র হয়ে দেখান আর মেয়রের চোখে গরিবদের দেখে রেশন বণ্টন করুন।’’

এই একটা টুইটেই অবশ্য থামেননি বাবুল। তিনি এর পরেও একের পর এক টুইট করতে থাকেন। বাবুলের জয়ের ব্যবধান উল্লেখ করে জিতেন্দ্র যে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, তার জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রীর ব্যাখ্যা— মেয়র হয়েও জিতেন্ড্র মেয়র হতে পারেননি, তৃণমূলই রয়ে গিয়েছেন, তাই এ বার ২ লক্ষের ব্যবধান হয়েছিল, ২০২৪ সালে ৫ লক্ষের ব্যবধান হবে। তার পরে মেয়রকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে মন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘দেশের খবর একটু রাখুন, পার্লামেন্ট চলছিল, আপনার আশীর্বাদে আমরা একটা মন্ত্রকও রয়েছে, তার পরে লকডাউন হল। কিন্তু দূর থেকে যা যা করেছি, সে সব তো নিশ্চয়ই দেখেছেন।’’

আরও পড়ুন: মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হল রাজ্যে, জারি সরকারি নির্দেশিকা

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে আসানসোলে বাবুলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন মুনমুন সেন। আর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রধান সেনাপতি ছিলেন আসানসোলের মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। গোটা শিল্পাঞ্চল তথা খনি অঞ্চলেই জিতেন্দ্র অত্যন্ত প্রভাবশালী। ফলে আসানসোলে রীতি মতো দুই মহারথীর টক্কর শুরু হয়েছিল। ফলে ভোটের প্রচার পর্ব এবং ভোটগ্রহণ পর্ব প্রবল উত্তপ্ত ছিল। দু’পক্ষের মধ্যে তিক্ততাও চরমে পৌঁছেছিল। কিন্তু সে তিক্ততা যে ভোট মেটার এত দিন পরেও মেটেনি, তা ফের স্পষ্ট হল। করোনা সঙ্কটের সঙ্গে যুঝতে গোটা দেশ যখন লকডাউনে, তখনও আসানসোলে তপ্ত বাগ্‌যুদ্ধ চলছে দু’পক্ষের মধ্যে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন