টানা তিন দিন ধরে জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গ

রাজ্য সরকারের আশঙ্কা সত্যি করে বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হুগলি ও হাওড়ার একাংশও। বালির বস্তায় আটকানো যায়নি আরামবাগে দ্বারকেশ্বর বাঁধের ভাঙন। বুধবার সকালে ফের ডুবেছে শহর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩০
Share:

গন্ধেশ্বরীর জলের তোড়ে ভেঙেছে বাঁকুড়ার সতীঘাট কজওয়ে। পাড় ধসে আটকে গিয়েছে গাড়ি। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

ঝাড়খণ্ডের জলে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ডুবুডুবু।

Advertisement

৭২ ঘণ্টারও বেশি হয়ে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল শহর জলবন্দি। শ্মশানও জলের তলায়। ফলে সৎকার হচ্ছে না। বিদ্যুৎ নেই। মিলছে না পানীয় জলও। শহরবাসীর আশঙ্কা বাড়িয়ে প্রশাসন মাইকে ঘোষণা করেছে, রূপনারায়ণ ও শিলাবতী নদীর বাঁধ যে কোনও সময় ভেঙে যেতে পরে।

রাজ্য সরকারের আশঙ্কা সত্যি করে বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হুগলি ও হাওড়ার একাংশও। বালির বস্তায় আটকানো যায়নি আরামবাগে দ্বারকেশ্বর বাঁধের ভাঙন। বুধবার সকালে ফের ডুবেছে শহর। ডিভিসি-র জলে এ দিন দুপুরে প্লাবিত হতে শুরু করেছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকা। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুর ১১টা নাগাদ ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়ার মাত্রা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ কিউসেক। ফলে ভাসতে পারে আমতা-২ ব্লকের কিছু এলাকাও।

Advertisement

জলবন্দি

প্লাবিত: ১২টি জেলার ১০৬টি ব্লক

ত্রাণ শিবির: ৫০টি

ক্ষতিগ্রস্ত: ১২ লক্ষ

ত্রাণ শিবিরে: ১২ হাজার

জল ছেড়েছে: মাইথন, পাঞ্চেত, তেনুঘাট, চান্ডিল এবং গালুডি জলাধার

ডিভিসি-র জলে ভেসেছে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ তল্লাটও। রায়না ২ ব্লকের দামোদর নদের ধারে বড় বৈনান, গোতান পঞ্চায়েত এলাকার ১৮টি গ্রাম জলমগ্ন। আবার দ্বারকেশ্বরের পাড়ে উচালনের ৭টি গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডাল বিমানবন্দরে জল উঠেছে। অনেক কয়লাখনিতে জল ঢুকে বন্ধ উৎপাদন। দামোদরের জল ঢুকে বাঁকুড়ার সোনামুখী, পাত্রসায়র, বড়জোড়া ও মেজিয়া ব্লকের বহু গ্রামও জলমগ্ন। মঙ্গলবার বীরভূমের লাভপুরের লাঘাটা সেতুতে যান চলাচল শুরু হলেও এ দিন সকাল থেকেই ফের জলের তলায় চলে গিয়েছে লাঘাটা। জল জমেছে বোলপুরের কঙ্কালীতলার মন্দিরেও। মুর্শিদাবাদের ভড়ঞা গ্রামে রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে তলিয়ে গিয়েছে এক ছাত্র।

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার সংসদের নিম্নকক্ষে লিখিত বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ আনেন, এই বন্যা নিছক প্রাকৃতিক কারণে নয়। পশ্চিমবঙ্গে যা দেখা যাচ্ছে তা অনেকটাই কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা ও এর পিছনে কেন্দ্রের দায়িত্ব রয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রবল বর্ষায় বাঁধগুলির জলস্তর বেড়েছে। কিন্তু রাজ্যকে না জানিয়ে হঠাৎ বাঁধের জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন