কোনও কারণ না-দেখিয়েই হাওড়ার আন্দুল রাজবাড়ির মাঠে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-কে যোগ-অনুষ্ঠান করার আবেদন বাতিল করে দিয়েছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানিয়ে দিলেন, ৭ জানুয়ারি নির্ধারিত দিনে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা আরএসএস অনুষ্ঠান করতে পারবে ওই মাঠে।
বিবেকানন্দের ১৫৫তম জন্মদিন এবং মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে রাজবাড়ি মাঠে ধ্যান ও যোগ প্রশিক্ষণের অনুষ্ঠান করার জন্য ডিসেম্বরের গোড়ায় সাঁকরাইল থানার অনুমতি চেয়েছিল আরএসএসের হাওড়া শাখা। পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলে সংগঠনের অভিযোগ। একই দিনে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব রাজবাড়ি সংলগ্ন মাঠে বেলা ২টোয় সভা করতে চেয়ে আবেদন জানায়। তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এর প্রতিবাদে সঞ্জয় বসু ও উৎপল সানি নামে জেলা আরএসএসের দুই কর্তা হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী সপ্তাংশু বসু ও অরিজিৎ বক্সী সকালে অভিযোগ করেন, একই জায়গায় অন্য দলকে সভা করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু যোগ অনুষ্ঠান কেন করতে দেওয়া হবে না, সদুত্তর দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। বিচারপতি বসাক অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদারকে নির্দেশ দেন, প্রশাসনের বক্তব্য এ দিনই জানাতে হবে।
বেলা ২টোয় মামলাটি ফের ওঠে। অভ্রতোষবাবু আদালতে জানান, আধ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি অনুষ্ঠান। দুই সভাস্থলের দূরত্ব ২০০ মিটারের বেশি নয়। দু’টি ক্ষেত্রেই মাইকের ব্যবহার হবে। আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন রয়েছে।
বিচারপতি জানতে চান, যোগ প্রশিক্ষণে কত লোক হবে? সপ্তাংশুবাবু জানান, হাজার দুয়েক। সরকারি কৌঁসুলি জানান, হাজারখানেক। বিচারপতি বলেন, পুলিশের পক্ষে ওই সংখ্যক লোক সামলানো কঠিন নয়। অভ্রতোষবাবু জানান, দু’টি অনুষ্ঠান যদি কিছু সময়ের ব্যবধানে হয়, তা হলে প্রশাসন রাজি। সপ্তাংশুবাবু জানান, তাঁদের মক্কেলরাও যোগ প্রশিক্ষণের সময় এগিয়ে আনতে রাজি।
দু’পক্ষের মতামত শুনে বিচারপতি নির্দেশ দেন, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা যোগ প্রশিক্ষণের অনুষ্ঠান হবে। সেটা শেষ হওয়ার পরে হবে রাজনৈতিক দলের সভা। গত বছর ১৪ জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা করার কথা ছিল আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবতের। কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। তখনও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বিচারপতির অনুমতি নিয়েই নির্ধারিত দিনে ব্রিগেডে সভা করে আরএসএস।