পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের দুই শীর্ষস্থানীয় আদালত

একই দিনে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের চাহিদা মতো চার কোম্পানি আধাসেনা পাহাড়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। রাজ্যকেও ওই সময়ে আরও বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

অগ্নিকাণ্ড: বিক্ষোভের আগুনে পুড়ে ছাই গ্রন্থাগার। শুক্রবার মিরিকে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

দার্জিলিং পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের দুই শীর্ষস্থানীয় আদালত। এ দিন এক জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময়ে পাহাড়ের মানুষকে শান্তি বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম পর্যন্ত জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশও দেয় তারা।

Advertisement

একই দিনে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের চাহিদা মতো চার কোম্পানি আধাসেনা পাহাড়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। রাজ্যকেও ওই সময়ে আরও বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যাতে যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল ব্যাহত না হয়, সেই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সিকিম সরকার। তাদের বক্তব্য ছিল, ওই জাতীয় সড়ক কার্যত সিকিমের জীবনরেখা। সেই জীবনরেখা অক্ষুণ্ণ রাখতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কিছুই করছে না। সেই মামলায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাশ থাকবে কি পাহাড়ে, উদ্বিগ্ন নেতারা

সর্বোচ্চ আদালতে আধাসেনা দেওয়া নিয়ে এক দফা চাপানউতোর হয় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে। একই রকম সওয়াল-জবাব হয় হাইকোর্টেও। সেখানে কেন্দ্রের তরফে মহিলা আধাসেনা এবং এসএসবি-র পক্ষে জোরালো সওয়াল করা হয়। তাদের হাতে যে বাড়তি বাহিনী নেই, সে কথাও জানানো হয়। পাহাড় পরিস্থিতি এখন কতটা গুরুতর, জবাবে রাজ্য সেটাই বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছে। এর পরেই কেন্দ্র ও রাজ্যকে বাহিনী বাড়াতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

আন্দোলনকারী নেতারা কেউ কেউ মানছেন, আদালতের উদ্বেগ যথার্থ। কারণ, তাঁদের বারবার বার্তা সত্ত্বেও সরকারি সম্পত্তি পোড়ানো হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কখনও পুড়েছে মিরিকের গ্রামীণ গ্রন্থাগার, কখনও কার্শিয়াঙের রেল আবাস। উন্মাদনা এতটাই যে উলঙ্গ হয়ে লাঠি-খুকুরি নিয়ে নাচও চলে। শুক্রবার পাহাড়ে এক সভায় প্রথম সারির কোনও নেতা ছিলেন না। নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা গোর্খাল্যান্ড ছাড়া আর কিছু মানব না। টানা বন্‌ধ, আন্দোলনের পরে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার কথা বললে নেতাদেরও ছাড়ব না।’’

সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য

আশা করব পাহাড়ের লোকজন আইনশৃঙ্খলার প্রতি সম্মান জানাবেন। শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন, যাতে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকে।

কেন্দ্র ও রাজ্যকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বাড়তি চার কোম্পানি বাহিনী যেন শুধুমাত্র দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই কাজে লাগানো হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশ

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ে চার কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করুক কেন্দ্র। রাজ্যও ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের আরও বাহিনী পাঠাক পাহাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন