সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারেই অ্যাসিড আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার জয়নগরের অ্যাসিড-দগ্ধ তরুণীকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ না-দেওয়ায় মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর নির্দেশ, এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা দিতে হবে।
ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে রাজ্যের অর্থ দফতরের অনুমতি এখনও মেলেনি জেনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, ‘‘হাইকোর্ট তো অবিলম্বে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না, তার পরেও অর্থ দফতরের অনুমতির প্রশ্ন ওঠে কী ভাবে!’’ বিচারপতি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে নির্দেশ দেন, ২ অগস্টের মধ্যে ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা দিতে হবে। তিনি রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে জানান, এই নির্দেশ না-মানলে একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের নির্দেশের অবমাননা হবে।
মনীষা পৈলান নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর হাসানপুর গ্রামের ওই তরুণীর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও শীর্ষেন্দু সিংহরায় জানান, মেয়েটির প্রাক্তন স্বামী সেলিম হালদার সঙ্গীদের নিয়ে গত নভেম্বরে তাঁর মুখে অ্যাসিড ছোড়ে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার আগেই তাঁদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। তরুণী থানায় সেলিম ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। পুলিশ কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও পরে তারা জামিন পেয়ে যায়। কিন্তু সেই থেকে সেলিম পলাতক। ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং সেলিমকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই তরুণী। বিচারপতি বাগচী ১২ জুলাই সরকারি কৌঁসুলিকে জানিয়েছিলেন, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আছে, কোনও মহিলার উপরে অ্যাসিড-হামলা হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার তাঁকে কমপক্ষে ৩ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য। নির্দেশ মেনেই জয়নগরের তরুণীর প্রাপ্য টাকা দু’সপ্তাহে মিটিয়ে দিয়ে আদালতকে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছিল।
সরকারি কৌঁসুলি এ দিন জানান, এই বিষয়ে রাজ্যের অর্থ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে। তবে একটু সময় লাগবে। তার পরেই বিচারপতি বাগচী টাকা মেটানোর সময়সীমা বেঁধে দেন।