সুদীপ্ত সেনের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করতে সিবিআইয়ের কাছে আবেদন জানালেন অসমের প্রাক্তন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। হিমন্ত-ঘনিষ্ঠ শিল্পী সদানন্দ গগৈকে কলকাতায় জেরা করছে সিবিআই। হিমন্তর বিরুদ্ধেও সারদা মামলায় কোটি কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ গুয়াহাটিতে হিমন্ত বলেন, “আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। সিবিআই আমাকে সুদীপ্তবাবুর সামনে বসিয়ে জেরা করুক। তা হলেই তাঁরা অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মজা লুটছেন, তাঁদের অনেকের তখন বেহাল দশা হবে।”
প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের একাংশের বক্তব্য, হিমন্তের ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের দিকেই। হিমন্তের কথায়, “২০১১ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল নয়। আমার হাতে বেশি ক্ষমতাও ছিল না। এক জন পোড় খাওয়া ব্যবসায়ী আমাকে মোটা টাকা দেবেন কেন? বরং স্বরাষ্ট্র ও অর্থ দফতরকে (যে দু’টি দফতর গগৈয়ের হাতে) খুশি করেই তো অর্থলগ্নি সংস্থার ব্যবসা চালাতে হয়।” সারদা-তদন্তে হিমন্তের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। ওই সময় তিনি অসমে ছিলেন না। এ নিয়ে হিমন্ত জানান, ব্যক্তিগত কাজে তাঁকে রাজ্যের বাইরে যেতে হয়েছিল। সে জন্য তিনি রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী নীলমণিসেন ডেকার আগাম অনুমতিও নিয়েছিলেন। হিমন্ত দাবি করেন, তাঁর দু’টি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই আপত্তিজনক কিছু পায়নি। ধুবুরিতে সারদার বিস্কুট কারখানার উদ্বোধনে যাওয়া নিয়ে হিমন্তের বক্তব্য, “অসমের দু’টি সংবাদমাধ্যমের মালিক আমাকে কারখানার উদ্বোধনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। জেলাশাসক ও এসপির থেকে জেনে নিয়েছিলাম, কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না। তাঁরা অভয় দেওয়ার পরই আমি সেখানে যাই। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের এক সিপিএম বিধায়কও হাজির ছিলেন।”
অসম বিধানসভায় ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে অর্থ দফতরের তরফে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে হিমন্ত সারদার নাম করেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। হিমন্ত বলেন, “জবাব সংক্রান্ত ফাইল এবং তথ্য সরকারি আমলারা তৈরি করেন। আমি কোনও নাম বাদ দিইনি। যিনি ফাইল তৈরি করেছিলেন, তাঁর কাছেই জবাব চাওয়া হোক।”
হিমন্তের দাবি, অসমে আইজি পর্যায়ের এক অফিসার কার নির্দেশে নোট পাঠিয়ে সুদীপ্তবাবুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছিলেন, তা খুঁজে দেখুক সিবিআই। অসমের যে আইজির বিরুদ্ধে সুদীপ্ত সেনকে সুরক্ষা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই এস এন সিংহ এ দিন বলেন, “এ সব রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”