ফাইল চিত্র।
এক দিকে দণ্ডকারণ্যে মাওবাদী দমন অভিযান, অন্য দিকে আসন্ন অমরনাথ যাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থা—এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতেই নেই যথেষ্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই রাজ্য না চাইলেও জঙ্গলমহল ও পাহাড়ে মোতায়েন থাকা সিআরপি-র বড় অংশ তুলে নেওয়া হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মাওবাদী দমনের কৌশল ঠিক করতে দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব মলয় দে ও রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কিন্তু রাজ্যের তরফে জানানো হয়, জঙ্গলমহল বা পাহাড়ে অশান্তি না থাকলেও সিআরপি রাখার প্রয়োজন রয়েছে। রাজ্যের প্রধান উদ্বেগের কারণ প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পেশ করা রিপোর্টে রাজ্য জানিয়েছে, এখনও মাঝে মধ্যেই ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদী স্কোয়াড সদস্যরা জঙ্গলমহলে ঢুকে পড়ছে। কিছু দিন থেকে তারা আবার ফিরে যাচ্ছে। সেই কারণেই মাওবাদী দমনে পূর্ব সিংভূম জেলায় যৌথ কম্যান্ড সেন্টার গড়ার যে প্রস্তাব কেন্দ্র দিয়েছে, তাতে আপত্তি নেই রাজ্যের। এমন পরিস্থিতিতে সিআরপি তুলে নিলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে বলেই রাজ্যের আশঙ্কা।
আরও পড়ুন: হেরিটেজ লালবাতি, নাছোড় বরকতি
যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা কিছুটা নিরুপায়। তাঁদের যুক্তি, দণ্ডকারণ্যে নতুন করে মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হবে। সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন। তার উপর জুলাই মাস থেকে শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। কাশ্মীরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ বার অমরনাথ যাত্রায় বিপুল সংখ্যায় বাহিনী মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে যে সব এলাকা তুলনামূলক ভাবে শান্ত সেখান থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তোলা ছাড়া উপায় নেই বলেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা।
রাজ্যে এখন সব মিলিয়ে ৪১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। তার মধ্যে ৩২ কোম্পানি সিআরপি। কেন্দ্র চায় ধীরে ধীরে পুরো বাহিনী তুলে নিতে। কিন্তু তাতে আপত্তি রয়েছে রাজ্যের। তাই আপাতত ৭ থেকে ১০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্য থেকে তোলা হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত।