সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
সম্পর্ক ছিল তিন বছরের। কিন্তু, বেশ কিছু দিন ধরেই সেই সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও কিছু দিন আগে বেঁকে বসেছিল প্রেমিক। মঙ্গলবার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করল বছর ছাব্বিশের প্রেমিকা। অভিযোগ, দীর্ঘ দিনের মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন ওই তরুণী।
পুলিশ জানিয়েছে, হাওড়ার লিলুয়ার বি রোডের বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়। বেলগাছিয়া নিতাইচরণ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল সে। গত তিন বছর ধরেই এনআরএস-এর এক ছাত্রের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সঞ্চিতার। ছেলেটির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়ায়। মেয়ের সম্পর্কের কথা জানত সঞ্চিতার পরিবারও। পুলিশের কাছে ওই পরিবার জানিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই প্রেমিকের সঙ্গে অশান্তি চলছিল সঞ্চিতার। কোনও কারণে ছেলেটি সঞ্চিতাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছিল। এ নিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙেও পড়েছিলেন সঞ্চিতা।
আরও পড়ুন: অ্যাসিড পোড়া মুখের রূপান্তর দেখে চমকে গেল সোশ্যাল মিডিয়া
পরিবার সূত্রে খবর, সোমবার রাতে প্রতি দিনের মতোই কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে পড়তে বসেছিলেন তিনি। ফোনে কথা বলছিলেন প্রেমিকের সঙ্গে। এই সময়েই অশান্তি ছমে পৌঁছলে ফোনে কথা বলতে বলতেই বিষ খান তিনি। টলমল পায়ে কোনও রকমে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে বাবা-মায়ের সামনেই ঢলে পড়েন মাটিতে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেএম-এ স্থানান্তরিত করা হয় সঞ্চিতাকে। কিন্তু গাড়ির মধ্যে মাঝ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় সঞ্চিতার। এর পরেই লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে সঞ্চিতার পরিবার।
আরও পড়ুন: মারা গেল নাবালিকা ধর্ষিতার সদ্যোজাত
পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্চিতার বাবা উত্তম চট্টোপাধ্যায় পেশায় পুরোহিত। সঞ্চিতা ছাড়াও আরও এক মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে উত্তমবাবুর। সঞ্চিতার ভাই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। মূলত তাঁর আয়ের টাকাতেই সংসার চলে সঞ্চিতাদের। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন সঞ্চিতা। অভাবের সংসারেও কষ্ট করে হোমিওপ্যাথি নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।