ব্যবসায়িক লক্ষ্যে পেঁপের চাষ

গ্রামবাংলায় বাড়ির উঠোনে পেঁপে গাছ পরিচিত ছবি। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ব্যবসায়িক লক্ষ্যে পেঁপে চাষ বিশেষ হয় না। অথচ, অতি উপকারী এই সব্জির চাহিদা সারা বছরই থাকে, ফল হিসাবে আরও বেশি উপকারী, আরও বেশি সুস্বাদু।

Advertisement

সামিমা সুলতানা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৯
Share:

গ্রামবাংলায় বাড়ির উঠোনে পেঁপে গাছ পরিচিত ছবি। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ব্যবসায়িক লক্ষ্যে পেঁপে চাষ বিশেষ হয় না। অথচ, অতি উপকারী এই সব্জির চাহিদা সারা বছরই থাকে, ফল হিসাবে আরও বেশি উপকারী, আরও বেশি সুস্বাদু।

Advertisement

মাটি ও জমি: উঁচু জায়গা, নিকাশির ভাল বন্দোবস্ত আছে, সেখানে পেঁপে চাষ করতে হবে। কারণ কয়েক ঘণ্টা জল দাঁড়ানো অবস্থাও পেঁপে গাছ সহ্য করতে পারে না। বেলে দোঁয়াশ বা দোঁয়াশ মাটি ভাল। অধিক অম্ল ও অধিক ক্ষার মাটিতে পেঁপে চাষ ভাল হয় না।

চারা তৈরি: বীজ থেকে চারা হয়। রোগমুক্ত উন্নত গাছ থেকে পাকা ফল পেড়ে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। এরপর বীজগুলোকে শুকনো ছাই মাখিয়ে জলে ধুয়ে নিয়ে শোকাতে হবে। বীজ শোধন জরুরি। পচা ঝুরঝুরে গোবর সার এবং পাতা পচা সার মিশিয়ে বীজতলা বানাতে হবে। বীজতলা ১৫-২০ সেমি উঁচু হবে। ৫ সেমি দূরত্বে ২-৩ সেমি গভীরে বীজ পুঁতে হালকা করে উপরে পাতাপচা সার বা মাটি ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজন মতো ঝারি দিয়ে জল দেবেন। বীজতলায় চারা ১০ সেমি মতো বড় হলে মূল জমিতে স্থানান্তর করতে হবে। মে থেকে জুন মাসের মধ্যে বীজ বুনে ফেলতে পারলে ভাল। অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে। তবে জলসেচের ব্যবস্থা থাকলে অক্টোবর মাসেও পেঁপের চারা লাগানো যেতে পারে।

Advertisement

চারা রোপণ: দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতায় ৪৫ সেমি করে গর্ত খুঁড়ে তাতে সার দিতে হবে। এর জন্য ১০ কেজি গোবর সার, ১ কেজি নিম খোল, ১০ গ্রাম কার্বোফিউরান ৩ জি, ২৫০ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট ভাল করে মিশিয়ে ১৫-২০ দিন ঢেকে রাখতে হবে। এরপর গর্তে সারমাটি মিশিয়ে দিতে হবে। সাবধানে বীজতলা থেকে মাটি সমেত চারা তুলে লাগাবেন। শিকড়ের যেন ক্ষতি না হয়। প্রতি গর্তে তিনটি করে চারা লাগান। ৫-৬ মাসের মধ্যে যখন গাছে ফুল আসবে তখন প্রতিটি গর্তে স্ত্রী বা উভলিঙ্গের গাছ রেখে বাকিগুলো তুলে দিতে হবে। তবে, প্রতি ১০টি গাছের জন্য একটি পুরুষ গাছ না রাখলে আবার পরাগসংযোগ ভাল ভাবে হবে না। এতে ফলনও কমে যাবে।

সার প্রয়োগ: ফল আসার লক্ষণ দেখা দিলেই গাছের চারপাশে জৈব ও রাসায়নিক সারের মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, ফসফেট ২৫০ গ্রাম, পটাশ ৭৫ গ্রাম ২০ কেজি গোবর সারের সঙ্গে মিশিয়ে গাছের চারপাশে দিতে হবে। অণুখাদ্যের প্রয়োজন হলে স্প্রে করতে হবে পাতায়।

পরিচর্যা: নিয়মিত জল দিতে হবে গাছে। আবার জল যাতে না দাঁড়ায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আগাছা যেন না হয়। গোড়ার মাটি হালকা করে খুঁড়ে ঝুরঝুরে করে দিতে হবে। স্ত্রী ফুল বাড়াতে পেঁপে গাছের ৪-৫ মাস বয়সে ইথারেল ১ মিলি প্রতি ৪ লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। এনএএ ৪০ এমজি প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করলে স্ত্রী ফুল বাড়ে।

লেখিকা দক্ষিণ দিনাজপুর
কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন